কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৫ পিএম
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৪, ০২:১৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

খরস্রোতা তিস্তা শুকিয়ে মরা খাল, জেলেদের দুর্দিন

একসময়ের খরস্রোতা তিস্তা নদীতে পানির প্রবাহ না থাকায় নদীটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। ছবি : কালবেলা
একসময়ের খরস্রোতা তিস্তা নদীতে পানির প্রবাহ না থাকায় নদীটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। ছবি : কালবেলা

রংপুরের কাউনিয়ায় এক সময়ের খরস্রোতা তিস্তা নদীতে পানির প্রবাহ না থাকায় নদীটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। নদীতে পানি না থাকায় শত শত মাঝি ও তিস্তা পাড়ের মৎস্যজীবীরা বেকার হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে তিস্তা নদী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নৌকা চালিয়ে একসময় কাউনিয়া ও রাজারহাট এবং লালমনিরহাট সদর উপজেলার শত শত মাঝি জীবন-জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে সে নদীর উজানে ভারতের গজল ডোবায় বাঁধ নির্মাণ করায় এক সময়ের খরস্রোতা তিস্তা এখন পানি শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। নদীকে ঘিরে কাউনিয়ার সভ্যতার ক্রমবিকাশসহ শত শত মানুষ একসময় জীবন-জীবিকা নির্বাহ করত। নদীতে পানি না থাকায় কাউনিয়া থেকে রাজারহাট, কুড়িগ্রাম হয়ে চিলমারী বন্দর পর্যন্ত নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নৌকার মাঝিরা বেকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।

কাউনিয়ায় নিজপাড়া মাঝিপাড়া গ্রামের মৎস্যজীবী শীতল, শুশিলসহ কয়েকজন জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে তিস্তা নদীসহ বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ ধরে তা বিক্রি করে জীবন চালিয়ে আসছি। কিন্তু বর্তমানে আর এ পেশায় থাকা যাচ্ছে না, তিস্তা নদী আর নদী নাই, চর পরে মরা খালে পরিণত হয়েছে। জীবন বাঁচাতে আমাদের এ পেশা অনেকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে।

মাছ বিক্রেতা সত্য বাবু জানান, ‘আগে তিস্তা নদীতে হরেক রকমের মাছ পাওয়া যেত, তার মধ্যে বিখ্যাত ছিল বইরাতি মাছ। তিস্তার মাছ অনেক সুস্বাদু হওয়ায় কেনার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসত আর আমরা মাছ বিক্রি করে আনন্দের সঙ্গে জীবন চালাতাম। এখন তিস্তা নদীতে পানি নাই আমাদের সেই দিনও আর নাই।’

মাছের আড়তদার ভোলা রাম বর্মন জানান, ‘একটা সময় ছিল তিস্তা নদীর মাছ কেনার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসত আড়তে। এখন নদীতে পানি নেই, সেই মাছও নেই, ক্রেতাও নেই। নদীতে মাছ না থাকায় ব্যবসা আর আগের মতো চলে না তাই ৪-৫জন কর্মচারীকে বাদ দিয়ে দিয়েছি, আবার অনেক ব্যবসা’ই বাদ দিয়েছে। নদীটি ড্রেজিং করলে হয়তো কিছু পানি থাকত, তখন কিছু মাছ পাওয়া যেত।’

পাঞ্জর ভাঙ্গা গ্রামের নৌকার মাঝি জব্বার, নুরল, কাদের, জলিল, জাহেদুল এর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে প্রায় চার মাস থেকে নদীর পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তখন থেকে নৌকা না চলায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকারিভাবে তাদের কোনো সাহায্য সহযোগিতা করা হয় না। অনেকে বাধ্য হয়ে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। যারা দিন মজুরির কাজ করতে পারছে না তারা বেশি অসহায় হয়ে পড়েছে।

নদীতে পানি না থাকায় বোরো চাষও হুমকির মধ্যে পড়েছে। সরকার দফায় দফায় তিস্তার পানি চুক্তি ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা বললেও তা বাস্তবতার মুখ দেখছে না।

কাউনিয়া এলাকার সকল মৎস্যজীবী, মাঝিমাল্লাসহ সাধারণ মানুষ তিস্তা নদীর হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যুক্তরাষ্ট্রকে তুলাধুনা করলেন পুতিন

খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যেসব সুবিধা আছে

তেঁতুলিয়ায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা

কলেজছাত্রের মৃত্যুর খবরে হাসপাতাল অবরুদ্ধ ও ভাঙচুর

ইসরায়েলকে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বয়কট ৪ দেশের

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রতিবন্ধীকে নির্যাতন

শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

৫ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ক্যারিবিয়ান সাগরে নিহত ৪

১০

দোনবাস না ছাড়লে রাশিয়া শক্তি দিয়ে দখল করবে : পুতিন

১১

দক্ষিণ সিরিয়ায় ইসরায়েলের আবারও হামলা

১২

সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কমাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র   

১৩

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ৪২ জনকে স্ট্যান্ড রিলিজ

১৪

 ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘তুই’ বলায় তুমুল সংঘর্ষ, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জন

১৫

আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই : গণতন্ত্র মঞ্চ 

১৬

চার দেশে বন্যায় ১৫০০ মৃত্যুর পর নতুন আতঙ্ক

১৭

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত

১৮

শাহজালালে ‘এয়ারপোর্ট মিনি ফায়ার এক্সারসাইজ-২০২৫’ সম্পন্ন

১৯

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম

২০
X