কুমিল্লায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের টেন্ডারকে কেন্দ্র করে মহানগর যুবলীগ নেতার ওপর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৩ এপ্রিল) এ মামরা দায়ের করেন আহত ওই যুবলীগ নেতা।
মামলায় কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টুসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে মোট ১৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলা করেন আহত মহানগর যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার মাসুদুল ইসলাম বাবু। তিনি কুমিল্লা মহানগর আ.লীগের সাবেক সহসভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমার অনুসারী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন। কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টু ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ধর্মসাগর পাড় এলাকার সোহাগ (৪০), রেইসকোর্স এলাকার ইয়াছিন (৩৭), শাসনগাচা এলাকার জালাল ওরপে কালা জালাল (৩৮)।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগে মাসুদুল ইসলাম বাবু নিজে বাদী হয়ে অভিযোগটি দায়ের করেন। আমরা অভিযোগ গ্রহণ করেছি। এ বিষয়ে আইনিব্যবস্থা চলমান।
আহত বাবু কালবেলাকে বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসের একটা বিলের কাজের বিষয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। এ সময় ২০-২৫ এসে আমাকে এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জ করতে থাকে। পিস্তলের বাট দিয়ে মুখে মারতে থাকে। আমি দৌড়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর রুমে ঢুকে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করি। এ সময় সবাই মিলে স্যারের সামনেই আমাকে ব্যাপক মারতে থাকে। স্যার তখন স্তব্ধ হয়ে বসেছিল।
কারা হামলা চালিয়েছে- এমন প্রশ্নে বাবু বলেন, যারা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে টেন্ডারবাজি করত, তারাই হামলা চালিয়েছে। তারা সবাই শুধু হাতে আর পায়ে আঘাত করেছে। সোমবার দুপুরে তিনি কাজের বিষয়ে কথা বলতে শিক্ষা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যান। এ সময় তার পিছু নেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রিন্টু ও তার নেতাকর্মীরা। পরে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল মাসুদকে পেছন থেকে ধরে ফেলে। তারা মাসুদকে শিক্ষা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে বেদম মারধর শুরু করে। এ সময় কয়েকজন পিস্তল বের করে তার মুখে আঘাত করে এবং টেন্ডারের জন্য এলে হত্যার হুমকি দেয়।
কুমিল্লার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর গুরুতর আহত বাবুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা সরকারি পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। আঘাতে শরীর ফুলে যাওয়ায় এ মুহূর্তে তার অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
এ দিকে কুমিল্লা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, মামলা দায়ের হয়েছে। তবে ঘটনার পরের দিন এজাহার করা হয়েছে। তবুও এ সময়ে আমাদের পুলিশ আসামি ধরার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সচেষ্ট রয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন জানান, সময়মতো মামল নেওয়া হয়েছে। আসামি ধরার সব প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। আশা করছি, আসামি ধরা পড়বে সহসায়।
মন্তব্য করুন