পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার বলেশ্বর নদী তীরবর্তী মাঝেরচর ও সাংরাইল এলাকার দরিদ্র মানুষের প্রধান পেশা নদীতে মাছ ধরা। এই জেলেপল্লির সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য ঈদসামগ্রী উপহার দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাতেখড়ি ফাউন্ডেশন।
‘এক বক্স ঈদ আনন্দ’ শিরোনামে এই উপহার দেওয়া হয়। উপহার পেয়ে বেজায় খুশি শিশুরা। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকালে জানখালী গ্রামের কাটাখাল এলাকায় ৫০টি পরিবারের শিশুদের হাতে ঈদসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। রঙিন বক্সে শিশুদের ঈদ উপহার হিসেবে সেমাই, চিনি, দুধ, পোলাওয়ের চাল ও মুড়ি দেওয়া হয়।
পশ্চিম হোগোলপাতি আজিজিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী লামিয়া বলে, এক বক্স ঈদের উপহার পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি। আমার বাবা-মা গরিব, অনেক সময় ঈদের বাজার করতে কষ্ট হয়। এটা আমাদের পেয়ে অনেক উপকার হয়েছে।
পশ্চিম হোগোলপাতি আজিজিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ওমর ফারুক বলে, রঙিন বক্সে ঈদ উপহার পেয়ে ভালো লাগতেছে। বক্সগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। সেমাই, চিনি, দুধ আমি মা-বাবাকে নিয়ে ঈদ পালন করতে পারবো ভেবে আনন্দ লাগতেছে।
আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম হোগলপাতির ইউপি সদস্য আবুল কালাম বলেন, এ ধরনের মহৎ কাজে উপস্থিত থাকতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আলোকিত মানুষের এমন মহৎ উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক। আগামী বছর থেকে সংগঠন পক্ষ থেকেও আরও বড় পরিসরে জেলেপল্লির শিশুদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারে।
সংগঠনের সভাপতি সজীব মিত্র বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। জেলেপল্লির অসহায় পরিবার ও স্কুল পড়ুয়া শিশুদের মধ্যে ঈদ আনন্দ ছড়িয়ে দিতে এই আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘জেলেপল্লির শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করা ও তাদের পাঠ্যাভ্যাস সৃষ্টির জন্য আমাদের সংগঠন ফ্রাইডে স্কুল ও উপকূল পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছে। সেখানে শিশুদের পাঠদান করার পাশাপাশি পাঠাগারে গল্পসহ মজার মজার বই পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া অমনোযোগী শিশুদের কাউন্সেলিং করে বিদ্যালয়মুখী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৮ সালের ১৭ মার্চ কয়েকজন বন্ধু মিলে গড়ে তুললেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাতেখড়ি ফাউন্ডেশন। এরপর খেজুরবাড়িয়া গ্রামে শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয় ফ্রাইডে স্কুল। উপজেলার নদীর পাড়ে সংগঠনটির আছে ৫টি উপকূল পাঠাগার। জেলে জনগোষ্ঠীর শিশুদের কল্যাণে কাজ করায় ও সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখায় ফাউন্ডেশনটি ২০২০ সালে অর্জন করে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড।’
মন্তব্য করুন