পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় জমেছে। ঈদের নামাজের পর থেকেই আনন্দ উপভোগ করতে দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেন সেখানে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকের আনাগোনায় শ্রীমঙ্গল এলাকা মুখর হয়ে উঠে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে নয়াভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ভিড় করছেন হাজারও মানুষ। পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের জায়গা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে সকাল থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীরা ছুটে যান। এখানকার জীববৈচিত্র্য ঘুরে দেখে তাদের ঈদের আনন্দ উপভোগ করেন তারা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে পর্যটকরা পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটিতে বেড়াতে এসেছেন এখানে।
দুপুরের পর থেকে উপচেপড়া ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠে চা বাগান, মাধবপুর লেইক, ৭১ বধ্যভূমি, চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, টি মিউজিয়াম এবং সিতেশ বাবুর চিড়িয়াখানাসহ দর্শনীয় স্থানগুলো। হৈ-হুল্লোড় আর নাচ-গানে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এদিকে চা বাগানসহ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোতে উপচেপড়া ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে টুরিস্ট পুলিশসহ প্রশাসনকে। তবুও দর্শনাথীদের নিরাপত্তা দিতে মোড়ে মোড়ে ছিল কঠোর নজরদারি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা শিক্ষিকা রুসনা বেগম বলেন, ঈদের ছুটিতে পরিবারের সবাইকে সময় দেওয়া যায়। তাই লাউয়াছড়ায় আসলাম। যদিও কয়েকবছর আগে একবার শীতকালে এসেছিলাম, আশা ছিল এইবার নতুন কিছু পাব, কিন্তু পেলাম না।
বি-বাড়িয়া থেকে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে মাধবপুর লেকে পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসা ডা. ফজলুর রহমান বলেন, প্রকৃতির অপার লীলা নিকেতন মাধবপুর লেক দেখে আমরা মুগ্ধ। রাস্তা খারাপ হওয়া সত্ত্বেও এখানে বেড়াতে এসে পর্যটকরা নিজেদের সাধ্যমতো আনন্দ উপভোগ করার চেষ্টা করছেন। জলের মধ্যে উঁচুনিচু পাহাড়ে চা বাগান ঘেরা, এ এক আলাদা মায়াবী টান। কিশোরগঞ্জ থেকে বেড়াতে আসা জাহিদুল হক বলেন, আমরা বন্ধুরা মিলে এখানে এসেছি। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না।
মৌলভীবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক প্রবাল সিনহা বলেন, পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারির কারণে এখানে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই পর্যটকরা আনন্দ উপভোগ করে বাড়ি ফিরছেন। প্রতিটি পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের অফিস সহকারী ক্যাশিয়ার আফজাল হোসেন বলেন, ঈদের দিন উদ্যানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পর্যটক প্রবেশ করেছেন। এতে রাজস্ব আয় হয়েছে দেড় লাখ টাকারও বেশি। আশা করছি আগামী কয়েকদিনে অনেক পর্যটকের আগমনে হবে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
মন্তব্য করুন