সবুজের সমারোহ আর টিলাবেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কিংবা প্রকৃতি কোনো কিছুরই কমতি নেই পর্যটন নগরী সিলেটে। এ ছাড়া রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্পট। জাফলং, বিছানাকান্দি, রাতারগুল ও পান্তুমাই ঝরনা, শাহজালাল (রহ.) এবং শাহপরান (রহ.) মাজারসহ নয়নাভিরাম এসব সৌন্দর্য অবলোকন করতে ঈদের ছুটিতে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসেন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে। নদী, পাহাড়, চা বাগান আর পাহাড়ি ঝরনার সমন্বয়ে অপূর্ব রূপে ভরা পর্যটন সিলেটের কেন্দ্রগুলো।
ঈদুল ফিতর ও বৈশাখীর ছুটির দিনগুলোতে লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠবে এসব পর্যটন কেন্দ্র। তাই প্রকৃতির আপন মহিমায় গড়ে ওঠা এই পর্যটন কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রয়েছে পর্যটকদের বরণ করে নিতে। ঈদ ও বৈশাখের ছুটিতে সিলেটের আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন দোকানগুলো সাজানো হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন আমেজে।
সাদাপাথর : সীমান্তের দিকে ক্যানভাসে আঁকা ছবির মতো সবুজ পাহাড়। নিচে পানি-পাথরের সংমিশ্রণ। পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে চলেছে ঠান্ডা পানির স্রোত। সে পানিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শিশু থেকে বয়োজ্যেষ্ঠরা।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথরে দেখা মেলে এমন দৃশ্য। তাই তো জল, পাথর আর বুনো সৌন্দর্যের টানে এখানে ছুটে আসেন শত শত ভ্রমণপ্রেমী।
রাতারগুল : বাংলার অ্যামাজন নামে পরিচিত সিলেটের গোয়াইনঘাটের রাতারগুল নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে ভরপুর। এমন বন বাংলাদেশে আর কোথাও দেখা যায় না। এমন একটি রহস্যময় জলাবনের নামই হচ্ছে রাতারগুল। রাতারগুল জলাবন বা রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন বা সোয়াম্প ফরেস্ট এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এটি সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থিত। ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয় এ বনকে।
জাফলং : জাফলংয়ের মায়াবী ঝরনা, পিয়াইন নদীতে বহমান স্বচ্ছ জলের স্রোতধারা, ওপারে ডাউকি নদীর ওপর ঝুলন্ত ব্রিজ, সমতল ভূমিতে জাফলং চা বাগান, তামাবিল জিরো পয়েন্ট ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের খাসিয়া পল্লি। এসবের সবকিছুই খুব সহজেই আকৃষ্ট করে আগত পর্যটকদের।
এ ছাড়া বিজিবির সংগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকায় রয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড নির্মিত দৃষ্টিনন্দন সিঁড়ি ও জাফলং চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় পিয়াইন নদীর ওপর জাফলং সেতু। যে সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে একই সঙ্গে দেখা যায় সমতল ভূমির চা বাগান, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ জলের স্রোতধারা ও ভারতের মেঘালয়ের সবুজ পাহাড়।
বিছনাকান্দি : বিছনাকান্দির জল আর পাথরের মিতালীতে জল-পাথরের বিছানা। যেখানে জলকেলি ও হৈ-হুল্লোড়ে মেতে ওঠেন পর্যটকরা। পর্যটকদের অসচেতনতার কারণে সেখানে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। তখন আনন্দ ভ্রমণ পরিণত হয় বিষাদে। জাফলং ও বিছনাকান্দির আকর্ষণীয় স্থানগুলো পর্যটকবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্রে সতর্কতামূলক নির্দেশনা সংবলিত সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে স্থানীয় এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদেরও এ বিষয়ে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি তারা যেন পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন থাকেন।
মন্তব্য করুন