ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের জিম্মি বাংলাদেশি ২৩ নাবিক অতঃপর জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছে। এতে মুক্তি পাওয়া নাবিকদের পরিবারে স্বস্তি এলেও তারা দেশে আসার আগ পর্যন্ত এখনো উৎকণ্ঠা রয়ে গেছে।
মুক্তি পাওয়া ২৩ নাবিকের মধ্যে নোয়াখালীর দুই নাবিক আনোয়ারুল হক রাজু ও মোহাম্মদ ছালেহ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে পরিবারের মাঝে শংকা কেটে স্বস্তি এসেছে। এখন তারা প্রতীক্ষার প্রহর গুণছেন কখন ফিরে আসবে তাদের সন্তান, ভাই ও স্বামী।
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে ২৩ জন নাবিকসহ অপহরণ করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। ২৩ নাবিকের মধ্যে রয়েছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের নাবিক রাজু (২৭) ও চাটখিল উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নের সিংবাহুড়া গ্রামের নাবিক মোহাম্মদ ছালেহ আহমদ (৪৩)।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নাবিক রাজু বাড়িতে এসে ঈদ করার কথা ছিল। বাড়িতে নতুন ঘরের কাজও চলছে ঈদের পরে রাজুর বিয়েকে উপলক্ষ করে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে রাজু সবার ছোট। গত বছর নভেম্বর মাসের শেষ দিকে রাজু সিঙ্গাপুর থেকে জাহাজে ওঠে। এরপর প্রথম রমজান থেকে ছেলের জিম্মি দশায় বদলে গেছে পরিবারের সব চিত্র। ঈদের দুই দিন পর রাজু’র মুক্তিতে পরিবারে এখন আনন্দ বিরাজ করছে। দীর্ঘ এক মাস পরে অক্ষত ও জীবিত অবস্থায় মুক্তি পাওয়া পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি রাজুসহ সকল নাবিক দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে আসবে বলে তারা প্রতীক্ষার প্রহর গুণছেন। নাবিক রাজুর বাবা মাস্টার আজিজুল হক বলেন, দীর্ঘ ৩২ দিন পর ছেলের মুক্তির খবরে আমরা পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরলাম। সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে ২৩ নাবিককে উদ্ধারে পদক্ষেপ গ্রহণ করায় তাদের ধন্যবাদ।
অপরদিকে, স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে চাটখিল উপজেলার নাবিক মোহাম্মদ ছালেহ আহমদের ছোট পরিবার। তিনিই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ছালেহ আহমদ গত বছর ঈদ করেছেন কর্মস্থলে। স্ত্রী ও তিন কন্যার আশা ছিল এবার তাদের সঙ্গে ঈদ করবেন। কিন্তু স্বামী জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার খবরে এলোমেলো হয়ে যায় তার স্বাভাবিক জীবন। তিন মেয়েকে নিয়ে অনেকটা বাকরুদ্ধ ছালেহ আহমেদের স্ত্রী তানিয়া আক্তার স্বামীর মুক্তির জন্য অপেক্ষা করছেন। ঈদের দুই দিন পরে নাবিক ছালেহ’র মুক্তির খবরে স্বস্তি এসেছে। এখন মেয়েদের নিয়ে স্বামীর ফিরে আসার প্রহর গুণছেন তানিয়া।
ছালেহ আহমদের স্ত্রী তানিয়া আক্তার বলেন, সরকারের কার্যকর ভূমিকায় জলদস্যুদের জিম্মি দশা থেকে বাংলাদেশি ২৩ নাবিকের মুক্তিতে আমাদের সকলের পরিবারের মাঝে স্বস্তি এসেছে। শংকা কেটে গিয়ে আনন্দ বিরাজ করছে সবার মাঝে। তবে এখনো নাবিক পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের নিয়ে উৎকণ্ঠার প্রহর গুণছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসবেন আপন নীড়ে।
মন্তব্য করুন