বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচ দিনে যাত্রী পারাপার বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩ হাজারে। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের ছুটিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাত্রী পারাপারের এই চাপ দেখা দিয়েছে।
ভ্রমণ, ব্যবসা ও চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট যাত্রীরা এক দেশ থেকে ভিন্ন দেশে যাত্রা করে। ইমিগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, ঈদ ও নববর্ষের সরকারি ছুটি থাকায় ১১ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত রেকর্ড পরিমাণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৩২ হাজার ৯৮৯ জন যাত্রী পারাপার করেছেন। যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত ৩ গুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে দুই দেশের ইমিগ্রেশনে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে পেট্রাপোলে ভোগান্তি বেশি বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ১১ এপ্রিল ঈদের দিন থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ দিনে মোট ৩২ হাজার ৯৮৯ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৪১৯ জন বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেন। আর ১৩ হাজার ৫৭০ জন ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। সরকারি ছুটি শেষ হওয়ায় আজ থেকে ভারত হতে দেশে ফেরা যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ওসি মো. কামরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ঈদের দিন থেকে আজ পর্যন্ত ৩৩ হাজারের বেশি যাত্রী দুই দেশের মধ্যে আসা-যাওয়া করেছেন। স্বাভাবিক সময়ে এ সংখ্যা পাঁচ থেকে ছয় হাজারের মধ্যে থাকে। তবে এবার রেকর্ডসংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করেছেন। যাদের অধিকাংশই ঈদ ও নববর্ষ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটির কারণে ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য ভারতে গমন করেন।
আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে একজন যাত্রী জানান, এবার পরিবার নিয়ে ভারতে ঈদ ও নববর্ষ উদ্যাপন করেছেন। ঈদের আগের দিন তিনি বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। স্ত্রী ও ছেলের চিকিৎসা করানোর পাশাপাশি বেড়ানোর উদ্দেশ্যে ঈদের আগের দিন ভারতে যান। বেশি সময় কাটিয়েছেন শিলিগুড়িতে। নববর্ষের দিনটি কলকাতা শহরে উদযাপন করেন তারা।
শফিকুল ইসলাম নামে একজন পাসপোর্টধারী যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ইমিগ্রেশন পার হতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বেনাপোলে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সহজতর হলেও ভারতের পেট্রাপোলে দীর্ঘ সময় লাগছে। পেট্রাপোলে ১৮টি কাউন্টার (ডেস্ক) থাকলেও সবটিতে কর্মকর্তা না থাকায় যাত্রীদের সারি দীর্ঘ হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ওসি কামরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ঈদের সময়ে যাত্রীদের চাপ বৃদ্ধির বিষয়টি মাথায় নিয়ে বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য সব ডেস্কে যাতে কর্মী থাকেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া পেট্রাপোলে ভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, পেট্রাপোলের ওসির সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ হচ্ছে। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে তাদের তাগিদ দেওয়া হয়। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, ইমিগ্রেশনে দেরি হচ্ছে না। দেরি হওয়ার মূল কারণ বিএসএফের তল্লাশি। এরপরও যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাগিদ দেন।
মন্তব্য করুন