নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় পুরোদমে চলছে বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। স্থানীয় কৃষকদের প্রত্যাশা, এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। এ সময় কৃষককেরা ধান মাড়াইয়ে জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। শ্রমিক সংকট থাকলেও ধানের দামে খুশি কৃষক।
চলতি মৌসুমে এ উপজেলার কৃষকেরা রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে হাল চাষ দিয়ে বোরো ধান আবাদ করেন। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে কৃষকরা জমিতে সঠিক সময় পর্যাপ্ত পানি পেয়েছে। এ ছাড়া কৃষি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে থেকে কৃষকদের সবরকম পরামর্শ প্রদান, পর্যাপ্ত সার পাওয়ায় এবার কোনো কিছুতেই কৃষকদের বেগ পেতে হয়নি। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সর্বত্রই বোরো ধানের ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে পৌর শহরসহ উপজেলায় ১৩ ইউনিয়নে ২০ হাজার ৭ শত ১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ টন ধান। এ উপজেলায় বি-আর ২৮, বি-আর ২৯, হীরা, হাইব্রিড ৭৫, ৮১, ৯১, সবুজ সাথী, এসএলএইডএইচ, জাগরনীসহ বিভিন্ন প্রজাতির উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করা হয়। এদিকে হঠাৎ কিছু কিছু এলাকায় বিআর ২৮, ২৯, ধানে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলেও কৃষি বিভাগ খুবই তৎপর ছিল রোগবালাই আক্রান্ত থেকে ফসল রক্ষা করতে। কৃষকদের উদাসীনতায় কিছু জমি ক্ষতি হলেও, এরপরও কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
সরেজমিনে শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে চিরাং ইউনিয়নের কৃষক মো. রেজাউল করিমের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, রোদ বৃষ্টি ভিজে দিন রাত পরিশ্রম করে এ মৌসুমে চার বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়। সময় মতো পানি, বীজ ও সার পাওয়ায় ও সঠিকভাবে জমির পরিচর্যা করায় ধানের ফলন ভালো ফলন হয়। দুই বিঘা জমির ধান কাটা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাকি ধান কাটা শেষ হবে। প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা। এই দামে আমরা খুবই খুশি।
কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, মৌসুমের শুরুতে সরকারিভাবে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এ উপজেলায় ৯ হাজার ৩০০ কৃষককে উফসী ধানের বীজ, ডিএপি সার ও এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। ফলন বৃদ্ধিতে মাঠপর্যায়ে থেকে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হয়। আজ পর্যন্ত হাওর এলাকায় ৫০ ভাগের বেশি ধান কাটা হয়েছে। উপজেলার হাওর এলাকার ইউনিয়নসমূহের কিছু বোরো ধানের জমিতে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণে কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার উপজেলার সর্বত্রই বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন