আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন ও সহযোগিতা চাইলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এই সমর্থন চান তিনি। অনুষ্ঠানে তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান হয়।
তারেক রহমান বলেন, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য, একটি নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আমাদের সামনে একটি বিশাল বড় সুযোগ। সারাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাইবোনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আগামী নির্বাচনে বিএনপি আপনাদের সমর্থন এবং সক্রিয় সহযোগিতা চাই।
তিনি বলেন, আমি ও বিএনপি বিশ্বাস করে, দল-মত, ধর্ম-দর্শন যার যার- রাষ্ট্র সবার; ধর্ম যার যার, কিন্তু নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার।
অনুষ্ঠানে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের কথা বার বার স্মরণ করতে চাই। এজন্য চাই যে, ১৯৭১ সাল আমাকে একটা স্বাধীন দেশ দিয়েছিলো, ভূ-খন্ড দিয়েছিলো, আমাকে একটা স্বাধীন সত্ত্বা দিয়েছিলো এবং সেজন্য আজকে আমার অস্তিত্ব আছে, আমি টিকে আছি। আমি স্মরণ করতে চাই ’২৪ জুলাই-আগস্টের শহীদদেরকে কারণ তারা আমাদের একটা গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছি। এই দুইটা জিনিসই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আজ একটা প্রচ্ছন্ন প্রচেষ্টা আছে একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার, এটার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সব নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ২৪‘র জুলাই-আগস্ট যেভাবে সত্য, ঠিক একইভাবে সত্য কিন্তু একাত্তরের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন কে? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা।
তিনি বলেন, আজ একটা নতুন করে কথা উঠছে ষড়যন্ত্র চলছে যে আপনার বাংলাদেশে এখানে এক ধরনের উগ্রবাদ মাথা চালা দিয়ে উঠছে। এই উগ্রবাদকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি কথাটা আজ এজন্য আরও বেশি করে বলছি যে, এইখানে আপনাদের সকলকে বিভক্তি বিভাজনের রাজনীতি কেউ করবেন না, অতীতে যা হয়েছে হয়েছে। এখন বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য, বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য, বাংলাদেশের সামনে নেওয়ার জন্য, বাংলাদেশ আরও উন্নত করবার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং ধর্মবিষয়ক সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপুর সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়ন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি অপর্ণা রায় দাস, নির্বাহী কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, নিপুণ রায় চৌধুরী, হিন্দু ধর্মীয় ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব তরুণ দে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ইসকন বাংলাদেশের প্রভু বিমলা প্রসাদ, কল্যাণ ফ্রন্টের মিল্টন বৈদ্য, পূজা উদযাপন ফ্রন্টের জয়দেব রায় জয়, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের একাংশের সুশান্ত চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, দলের যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল বারী ড্যানি, জন গোমেজ, সুশীল বড়ুয়া, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বসু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
মন্তব্য করুন