মতলবের ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবীর মোট ৭০ কিলোমিটার পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলে ও আড়তদারদের পদচারণায় সরব চাঁদপুর বড়স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। তবে এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। ইলিশের জন্য মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি জনপ্রিয় হলেও এবার সেই স্থান দখলে নিয়েছে পদ্মা নদীর বড় বড় পাঙাশ।
জেলেরা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলেও ঝাঁকে ঝাঁকে ধরছেন বড় আকারের সব পাঙাশ। কোনো কোনো জেলের এক একটি নৌকা থেকেই দিনে ৪০-৪৫টি পর্যন্ত পাঙাশ ঘাটে নামাতে দেখা গেছে।
শনিবার (৪ মে) বিকেলে জেলে ও আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
জেলেরা বলছেন, ১২ আঙুল ফাইল ডোম জালে আটকা পড়ছে পাঙাশ। আর ইলিশ না পেয়ে এখন পাঙাশ বিক্রি করেই উঠাতে হচ্ছে ট্রলারের তেলসহ নিজেদের খরচ।
পুরানবাজারের জেলে কাদির বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা জাল ফেলেও নদীতে আমরা ইলিশ পাচ্ছি না। ছোট ছোট কিছু জাটকা পাচ্ছি যা দিয়ে তেল খরচও উঠছে না। কীভাবে সংসার চালাব তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছি। তবে পাঙাশ পাওয়ায় এখনো পর্যন্ত কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছি।
চাঁদপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবে বরাত বলেন, এখানে সর্বনিম্ন ৫ কেজি থেকে ১৫ কেজি ওজনের পাঙাশ পাওয়া যাচ্ছে। আর এসব পাঙাশের দাম হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১০০ মণ পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে। পদ্মার পাঙাশ সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদা চাঁদপুর জেলাসহ সারা দেশে বেড়েছে। তাই এ জেলার পাঙাশ দেশের নানা স্থানেও পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, অভিযান সফল বলেই নদীতে ইলিশের পাশাপাশি পাঙাশসহ নানা প্রজাতির মাছ বেড়েছে। তবে ইলিশ নিয়ে জেলেদের হতাশ হবার কারণ নেই। সামনে বড় বড় ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের মৎস্য গবেষক ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, নদীতে মা ইলিশ পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিম ছেড়েছে। তাই টার্গেট অনুযায়ী, জেলেরা নদীতে ইলিশ পাবেন বলে প্রত্যাশা করছি। এবার ৬ লাখ টন ইলিশ উৎপাদন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর নদীর পানিতে পর্যাপ্ত খাবার পাওয়ায় বড় বড় পাঙাশ পাওয়া যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন