রংপুরের পীরগঞ্জে পরিবেশ দূষণ করে কেরোসিনের বিকল্প জ্বালানি তেল উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে বাইসাইকেল, রিকশা ও গাড়ির পুরোনো টায়ার গলিয়ে তেল উৎপাদন করছে একটি কোম্পানি। টায়ার গলানোর কাজে জ্বালানি হিসেবে খড়ি ব্যবহার করায় টায়ার আর খড়ির কালো ধোঁয়ায় এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে বায়ুদূষণের সঙ্গে ক্ষতি করছে মানুষজন, পশুপাখি ও বিভিন্ন উঠতি ফসলের।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের থিরারপাড়া গ্রামে মেসার্স মন্ডল প্লাস্টিক অ্যান্ড রাবার ফুয়েল প্লান্ট নামে ওই কারখানায় দৈনিক ২২ টন টায়ার গলিয়ে ৬ টন তেল উৎপাদন করা হয়। ওই ২২ টন টায়ার গলাতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় আরও কয়েক টন কাঠ। ফলে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল। কাঠ আর টায়ারের কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম। সেই সঙ্গে মারাত্মক দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। পরিবর্তিত আবহাওয়ার কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে জলবায়ুতে। ফলে ওই এলাকায় শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা কাশিজনিত নানা রোগে ভুগছেন। কারখানার মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় ক্ষতি সত্ত্বেও এলাকার মানুষজন ভয়ে মুখ খুলতে সাহস করছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, কারখানায় যখন টায়ার গলায় তখন গন্ধে ঘরের বাইরে বের হওয়া যায় না। ফসলের মাঠে কাজ-কর্ম বাদ দিয়ে বাড়িতে ঘরে ঢুকে বসে থাকতে হয়।
এ বিষয়ে কারখানার মালিক শামিম মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার সব কাগজপত্র আছে। আমি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েই কারাখানা দিয়েছি বলেও দাবি করেন তিনি। ইউএনও আমাকে অনুমতি দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত কোনো প্রকার কাগজপত্র দেখাতে অস্বীকৃতি জানান।
পীরগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মিঠু তালুকদার বলেন, বনাঞ্চল ও পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু করার অনুমতি দেয় না বন অধিদপ্তর।
ইউএনও ইকবাল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণ করলে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজহারুল ইসলাম বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো পরিবেশ ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। খোঁজখবর নিয়ে অবশ্যই জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন