ঘড়ির কাঁটায় তখন ঠিক ৯টা ১৬ মিনিট। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি অটল বিহারী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের চার নম্বর মহিলা বুথে ঢুকেছেন একজন ভোটার। সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তখনো বান্ডিল থেকে ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ভোটারের হাতে দেননি। এর আগেই সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার টেবিলে ব্যালট পেপারে সিল মেরে দিলেন ভোটার। এর চার মিনিট আগে পাশের পুরুষ বুথে খোদ এক প্রার্থীর এজেন্ট পোলিং অফিসারের টেবিলেই ব্যালট পেপারে সিল মেরেছেন।
চার নম্বর বুথে দায়িত্বরত সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. রাসেল উদ্দিনের কাছে ব্যালটে সিল মারা প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিক জানতে চাইলে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি কিছুই করতে পারিনি’।
এমন চিত্র চোখে পড়ল ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার নির্বাচনে। নারী বুথে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলামের চশমা প্রতীকে এবং পুরুষ বুথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাইদুর রহমান স্বপনের কাপ-পিরিচ প্রতীকে সিল মারা হয়েছে। কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী ছাইদুর রহমান স্বপনের বাড়ি কুটি গ্রামে।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা কুটি অটল বিহারী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে এমন চিত্র দেখতে পেয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ভোটকেন্দ্রের নিচতলায় যখন এমন কাণ্ড চলছিল, তখন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন দোতলায় বসে অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত ছিলেন। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে তিনি বুথে ঢুকে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেন।
এরইমধ্যে বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানতে পেরে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্সকে ওই কেন্দ্রে পাঠান। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদা আক্তার ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভোটকেন্দ্রে এসে ওই ভোটারদের খুঁজে পাননি।
নাহিদা আক্তার কালবেলাকে জানান প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে এসে জানতে পেরেছি ভোটাররা চলে গেছেন। এজন্য আমি প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে বলেছি বিষয়টি লিখিতভাবে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটকে অবগত করতে। নাম অনুযায়ী ওই ভোটারকে ডেকে এনে তার বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, এই কেন্দ্রের ৮টি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৮১৯ জন।
মন্তব্য করুন