বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলের মতো কক্সবাজারে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মাঝে মাঝে দমকা হওয়া ও বজ্রপাত হলেও কোথাও তেমন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সোমবার (২৭ মে) শেষ দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশও মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে।
তবে কক্সবাজারে রিমালের বিপদ কেটেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বিপৎসংকেতও। আর যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাণহানি এড়াতে উপকূলীয় বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। কক্সবাজারে এ পর্যন্ত ১০ হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয় বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ তোফায়েল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রথমাংশ কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে অতিক্রম করেছে। শেষের অংশটি তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। তাই আতঙ্কের কিছু নেই। এখন ৯নং মহাবিপৎসংকেত কমিয়ে কক্সবাজারকে ৩নং স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তবে ভারি বর্ষণের পাশাপাশি জোয়ারের পানির উচ্চতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন এ আবহাওয়াবিদ।
এদিকে রাতের দমকা হাওয়ায় কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে গাছ ভেঙে যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে। এ ছাড়া বৃষ্টির পানিতে কক্সবাজার শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নিম্নাঞ্চলে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরকারি কর্মকর্তা নুর হোসেন বলেন, সড়কে গাছ ভেঙে পড়ায় মেরিন ড্রাইভে আটকা পড়ি।
মহেশখালীর আব্দুর রশিদ বলেন, রিমালে কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে পৌরসভা এলাকায় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পড়ছে।
এর আগে কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। উপকূলীয় লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. শাহিন ইমরান বলেন, রিমাল মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রায় ১০ হাজার মানুষকে রাতেই আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দমকা হওয়া বইলেও বড় ধরনের কোনো ক্ষতির খবর আমরা পায়নি। এ ছাড়া উৎপাদিত লবণ ও বোরো ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জেলায় ৬৩৮টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে জরুরি মোকাবিলায় জিআর নগদ দুলাখ ৭৫ হাজার টাকা, দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যবস্থাপনা তহবিলের ১৮ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৮ টাকা, ৪৮৬ টন চাল মজুত রাখা হয়েছে। খোলা হয়েছে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। এ ছাড়া দুর্যোগকালীন সময় কাজ করবে ৮ হাজার ৬০০ জন সিপিপি এবং দুহাজার ২০০ জন রেড ক্রিসেন্ট সদস্য।
মন্তব্য করুন