ফেনীতে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাতাসের তীব্রতায় জেলার উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীতে বেশকিছু ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে মাথা গোঁজার সম্বলটুকু হারিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দুর্গতরা।
সোমবার (২৭ মে) দুপুরের পর থেকে বাতাসের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীতে বেশকিছু ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন দুর্গতরা।
সোমবার বিকেলে সোনাগাজীর চরখন্দকারে জেলেপাড়া এলাকায় বেঁড়িবাধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। এই এলাকার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়কগুলোতেও রয়েছে পানি।
সোনাগাজী দক্ষিণ চরচান্দিয়া এলাকার বর্গাচাষী মো. রাসেল বলেন, মা, বোন, স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পাশে সরকারি জায়গায় একটি ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছিলাম। আজকে বাতাসে আমাদের মাথা গোঁজার একমাত্র সম্বলটুকুও ভেঙে পড়েছে। এখনো অনেক বাতাস হচ্ছে। রাতে পরিবারের ৫ সদস্য কোথায় থাকব সেটিও জানি না।
রফিকুল ইসলাম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, রোববার রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। বাতাসে কিছু গাছ উপড়ে পড়ে বেশকিছু ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় চলে গেলেও এখনো ঝোড়ো হাওয়া বইছে। বৃষ্টিতে বের হওয়ারও উপায় নেই।
শহরের সুলতানপুর এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ বণিক বলেন, রোববার মধ্যরাত থেকে বিদ্যুৎ সংযোগে সমস্যা করছে। সারাদিনে মাত্র দেড় ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎ ছিল। তীব্র বাতাস ও বৃষ্টিতে ঘরে বসেই সময় কাটাচ্ছি।
সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মিলন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে তীব্র বাতাসে ওই ইউনিয়নে অন্তত ২০-২৫টি ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়ে কিছু ঘর ভেঙে গেছে। এখনো বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় ক্ষতির চূড়ান্ত তথ্য জানা সম্ভব হচ্ছে না। আবহাওয়া অনুকূলে এলে ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত উপজেলায় বড় ধরনের ক্ষতি কিংবা হতাহতের তথ্য নেই। বাতাসে কিছু ঘরের টিন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আবহাওয়া অনুকূলে না আসায় এখনো ক্ষতির চূড়ান্ত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।
ফেনীর জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে রোববর রাত থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বাঁধের পরিস্থিতি ও নদীর পানি বৃদ্ধির গতিবিধি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীতে শুকনা খাবারের জন্য ২ লাখ টাকা, ২ মেট্রিক টন চাল, এক লাখ টাকার শিশুখাদ্য ও এক লাখ টাকার গো-খাদ্য ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন