পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩, ০৮:৫২ পিএম
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৩, ০৮:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দুই ওসিকে দায়ী করে থানার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর আত্মহত্যা

চিরকুটে লিখে দুই ওসিকে দায়ী করে থানার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর আত্মহত্যা।
চিরকুটে লিখে দুই ওসিকে দায়ী করে থানার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর আত্মহত্যা।

পিরোজপুরের চিরকুটে দুই থানার ওসিকে দায়ী করে আল মামুন নামে থানার এক পরিচ্ছন্নতা কর্মী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার সকালে বিষপানের পর রাতে ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

জানা গেছে, আল মামুন পিরোজপুর সদর থানায় ঝাড়ুদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ইন্দুরকানী উপজেলার গাবগাছিয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। প্রায় ১০ বছর ইন্দুরকানী থানায় চাকরি করার পর প্রায় দুই মাস আগে ইন্দুরকানী থেকে পিরোজপুর সদর থানায় বদলি করা হয় মামুনকে।

চিরকুটে আল মামুন লিখেন, ‘আমি নিরদোশ (নির্দোষ) আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ইন্দুরকানী থানার ওসি এনামুল হক আর পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মো. হোসেন। আমি ইন্দুরকানী থানার ওসির টাকা চুরি করি নাই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি মরার পর আমার লাশটা পোশমর্টাম (পোস্টমর্টেম) করবেন না। লাশটা আমার মামার বাড়ি দাফোন (দাফন) করবেন।’

মামুনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম জানান, তার স্বামী পিরোজপুর সদর থানায় কাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরে যেত। ৪ জুন বিকেলে বাড়িতে ফেরার পর তাকে খুবই বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। মামুন তাকে জানায় যে, মসজিদ থেকে একটি জায়নামাজ চুরির অভিযোগে পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন তাকে গালমন্দ করার পাশাপাশি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। পরের দিন সকালে বাজারে গিয়ে আগাছা নিধনের ওষুধ কিনে তা পান করে মামুন। এরপর বাড়িতে এসে স্ত্রীকে জানালে তারা দ্রুত তাকে ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানে মামুনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে রওনা হয় পরিবারের সদস্যরা। পথে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মামুনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে মামুনের মরদেহ ঢাকায় আছে। আজ সকালে ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে নেওয়া হয়। মামুনের স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ইন্দুরকানী থানায় থাকাকালীন ওই থানার ওসি এনামুল হক তার স্বামীকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন। মামুন পিরোজপুর সদর থানায় যাওয়ার পর ইন্দুরকানী থানার ওসি ওই থানার ওসির কাছে তার স্বামী সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলেছে যাতে সেখানেও তার স্বামী নির্যাতিত হয়।

এ বিষয়ে পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, থানায় চুরির কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ছাড়া মামুনকে গালাগাল বা মারধরেরও কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ছাড়া ঘটনাটি ইন্দুরকানী থানায় ঘটেছে। তাই এ বিষয়ে কিছুই জানি না।

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান জানান, মামুনের আত্মহত্যার বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। তবে তাকে গালাগাল বা মারধরের কোনো বিষয় তার জানা নেই। এ ছাড়া এ বিষয়ে তিনি কোনো অভিযোগও পাননি। তবে চিরকুটের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। এ ঘটনায় কেউ দায়ী থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৬ বছরের শিশুকে আছাড় মেরে ‘হত্যা’

আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনা নিয়ে টিআইবির প্রশ্ন

চাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে রাফির প্রতিক্রিয়া

বিস্কুট-পানীয় বিতরণের অভিযোগ গকসুর জিএস প্রার্থীর বিরুদ্ধে 

পাইক্রফটের ক্ষমা চাওয়ার ভিডিও প্রকাশ করল পিসিবি

পালানোর সময় ১৭ বিয়ে করা সেই বন কর্মকর্তা আটক

বাংলাদেশসহ যে ৫ দেশকে ‘হুমকি’ ভাবছে ভারত

সাদাপাথরকাণ্ডে বিএনপির দুই নেতাকে শোকজ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে ঘুষকাণ্ডে নতুন মোড়

১৬ দিনে ২০ হাজার কোটি টাকা পাঠাল প্রবাসীরা

১০

যুক্তরাষ্ট্রের যে ১০ শহরে সবচেয়ে বেশি মুসলিমের বসবাস

১১

ভাঙ্গা থানায় ভাঙচুরের ঘটনায় নিক্সন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মামলা

১২

এক লাখের বেশি ওয়ার্ক পারমিট দিয়েছে ক্রোয়েশিয়া

১৩

‘বছিলা’ অনলাইন সোশ্যাল প্লাটফর্মের মশা নিধন কার্যক্রম

১৪

আগামী মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার প্রস্তাব বাতিলের আহ্বান টিআইবির

১৫

সেই পাইক্রফটই পাকিস্তান ম্যাচের রেফারি

১৬

এবারের দুর্গাপূজা আরও উৎসবমুখর পরিবেশে হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 

১৭

চার সংগঠনকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র

১৮

দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিবের বিবৃতি

১৯

চট্টগ্রামে অগ্নিদগ্ধদের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে, ৪ জনকে পাঠানো হলো ঢাকায়

২০
X