খুলনার কয়রার দশহালিয়া গ্রামে জোয়ারের পানিতে ভাসছে অর্ধশতাধিক পরিবার। ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে জরাজীর্ণ বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। তাৎক্ষণিক স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকাবাসী বাঁধের ওপর বস্তা দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
বুধবার (২৯ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, দশহালিয়ার দুটি স্থানের ৭০ মিটার বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে।
বুধবার ভোর থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় ৫ শতাধিক স্থানীয় জনগণ ফের বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে। ঐদিন বেলা দেড়টা পর্যন্ত কাজ করে দুটি পয়েন্টে রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়। তবে যথাসময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বস্তা, জিও ব্যাগ না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বালুর বস্তা না দিতে পারায় জোয়ারের পানিতে ফের রিং বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্লাবিত হয় এলাকা। সেখানে অর্ধশতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। তাদের সুপেয় পানি ও খাবারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। মিলছে না অসুস্থদের চিকিৎসা সেবা। তলিয়ে গেছে কয়েকশ চিংড়ির ঘের।
দশহালিয়া এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন, স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুল, আরাফাতসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দশহালিয়ার ওই স্থানটি বারবার ভাঙছে। দুই বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ সংস্কার করলেও ফের ভেঙেছে। মূলত, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ হাত বদল হওয়ায় মানসম্মত হয় না। মূল ঠিকাদার থেকে কাজ সম্পন্ন করা শ্রমিক সরদার পর্যন্ত কয়েকটি দফায় লভ্যাংশ রেখে হাত বদল হয়। ফলে বরাদ্দের দশ শতাংশ টাকারও কাজ হয় না বলে অভিযোগ তাদের।
মহারাজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলা পরিষদের সদস্য মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন লাভলু বলেন, বাঁধ না ভাঙা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড গুরুত্ব দেয় না। তাদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে আজ আমরা পানিবন্দি। তিন দিন হলো এখান থেকে জোয়ার ভাটায় পানি ওঠানামা করছে। এরপরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের চরম উদাসীনতা রয়েছে। বালুপূর্ণ জিও ব্যাগ দেওয়ার কথা থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড সেটা এখানে পৌঁছায়নি। তাদের গাফিলতিতে আজও পানি আটকানো সম্ভব হয়নি।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা জনগণের সঙ্গে থেকেই সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। বাঁধ নির্মাণের সকল সরঞ্জামাদি আমরা সরবরাহ করছি। শ্রমিকের মজুরিও পরিশোধ করা হবে।
মন্তব্য করুন