যশোরের মনিরামপুরে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের ঘটনাটি সাজানো নাটক। পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় সংসদ সদস্যের লোকজন নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে ফাঁসানোর জন্য এ ষড়যন্ত্র করেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেলে উপজেলা আ.লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৪ মে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন আ.লীগ কার্যালয়ে মনিরামপুরের নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলুকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। পর দিন ২৫ মে স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম ইয়াকুব আলী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন পরিকল্পিতভাবে সেখানে যান। তাদের দাবি অফিস খুলতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি ভাঙা দেখতে পান। এ ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাৎক্ষণিক তারা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। ছবি ভাঙচুরের ঘটনায় নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তার ফারুক মিন্টুকে দোষারোপ করা হয়েছে। ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিয়ে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
অথচ, গণসংবর্ধনা শেষে আ.লীগের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে আমরা চলে যাই। চক্রান্ত করে স্থানীয় এমপি ও উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সুপরিকল্পিতভাবে তাদের লোক দিয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করেছে। যা পরিক্ষিত আ.লীগের কোনো কর্মী করতে পারে না। আমরা পরবর্তীতে জানতে পেরেছি, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির এক সাবেক নেতাসহ কয়েকজন মিলে এহেন জঘন্য ঘৃণিত কাজ করেছে। যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, সাজানো নাটক করে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেওয়াল থেকে নামিয়ে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে তারা। যারা প্রকৃত আ.লীগ করে, তাদের ওই ছবি নামাবে এ সাহস হবে না। যারা নবাগত তারাই এমন এহেন কাজ করতে পারে। এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মলতে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাড. বশির খান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, আলমগীর হোসেন, আব্দুল আলীম জিন্নাহ ও সিরাজুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে মনিরামপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন কালবেলাকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মনোহরপুর আ.লীগের দলীয় কার্যালয়ে দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সবুর। ২৪ মে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে আব্দুস সবুরের কাছ থেকে কার্যালয়ের চাবি নিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এমপি’র ছবি সম্মলিত ব্যানার ছিড়ে ফেলা হয়। খবর শুনে ২৫ মে আমরা সেখানে যাই। স্থানীয় আ.লীগ নেতাকর্মী, পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে দলীয় কার্যালয়টি খোলা হয়। প্রবেশ করতেই কার্যালয়ে টাঙ্গানো বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি এবং চেয়ার ভাঙচুর ঘটনা দেখার পর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সভা করা হয়। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় আব্দুস সবুর মনিরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ছাড়া বিষয়টি সংগঠনের সংশ্লিষ্ট শীর্ষ পর্যায়ে জানান হয়েছে।
যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ এস এম ইয়াকুব আলী কালবেলাকে বলেন, আ.লীগ নেতাকর্মী, পুলিশ প্রশাসন, গণমাধ্যম কর্মীসহ সকলের উপস্থিতিতে দলীয় কার্যালয়টি খোলা হয়। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে আমরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন