ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সরকারি কাজে বাধা এবং গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এবং সহসভাপতি দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১০ জুন) দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বোয়ালমারী থানায় ডিবি পুলিশের এসআই মোহাম্মদ হান্নান মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
রোববার (৯ জুন) বিকেলে ৬টার দিকে বোয়ালমারী পৌর সদরের নাট মন্দির সংলগ্ন সড়কে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মুর্তজা তমাল (৩২) ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. আরিফুল ইসলাম রনি (২৮)। তারা বোয়ালমারী উপজেলা সদরের কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসদরে প্রতি রোববার বড় হাট (বাজার) বসে। ভাঙাচোরা রাস্তা ও হাটের কারণে সদরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নাট মন্দির সংলগ্ন সড়কে ওইদিন প্রচুর যানজট ছিল। ওই যানজটের মধ্যে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি গাড়ি যাচ্ছিল। ওই গাড়ির পেছনে ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোর্তুজা আলী তমাল ও সহসভাপতি আরিফুল ইসলাম রনি মোটরসাইকেলযোগে যাচ্ছিলেন। যানজটের কারণে ডিবি পুলিশের গাড়িটি অনেকটা থমকে ছিল।
গাড়িটির পেছন থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের বহনকারী মোটরসাইকেল থেকে হর্ন বাজানো হচ্ছিল। এ অবস্থায় ডিবি পুলিশের গাড়ি থেকে মির্জা গোলাম গাউস নামে এক কনস্টেবল নেমে তাদের উচ্চস্বরে বলেন, ‘দেখতেছেন যানজটের কারণে গাড়ি সামনের দিকে যেতে পারছে না; তারপরও আপনারা বারবার হর্ন দিচ্ছেন কেন?’
এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য ও ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে ডিবি পুলিশের ওই সদস্য ছাত্রলীগ সভাপতিকে থাপ্পড় মারে। পরে ছাত্রলীগ নেতারা ডিবি পুলিশের কনস্টেবলকে মারধর করে। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ দুই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের আহত সদস্য মির্জা গোলাম গাউস ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী বলেন, ডিবি পুলিশের সঙ্গে রাস্তায় যানজটের কারণে দুইপক্ষের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। সভাপতি ছাত্রলীগের যোগ্য অভিভাবক। আমরা সব সময় প্রশাসনকে সহযোগিতা করি। তবে যতটুকু শুনেছি ঘটনার সময় প্রথম পর্যায়ে কেউ কাউকে চিনতে পারেনি।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, খবর পেয়ে আমিও রাতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। পুলিশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে মাত্র। আশা করছি দ্রুত বিষয়টির সমাধান হবে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মো. হান্নান বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলাটি দায়ের করেছেন।
ফরিদপুর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি আব্দুল মতিন বলেন, সরকারি কাজে বাধা এবং গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওপর হামলা, মারধর করে আহত করার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে সোমবার ফরিদপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন