শাহজাহান ইসলাম লেলিন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৩, ০৪:৪১ পিএম
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৩, ০৫:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

খেলনা বিক্রি করেই চলে ‘মজিদ চাচার’ সংসার

কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে খেলনার পসরা সাজিয়ে বসে আছেন মজিদ উদ্দিন। ছবি : কালবেলা
কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে খেলনার পসরা সাজিয়ে বসে আছেন মজিদ উদ্দিন। ছবি : কালবেলা

‘বাজান বয়স হয়ে গেছে। আমার শরীর দুর্বল, হাত-পা কাপে। হাতে-পায়ে শক্তি পাই না। কষ্ট হলেও শিশুদের খেলনা সৈয়দপুর থেকে কিনে এনে বিক্রি করি। অল্প পয়সায় মালও দিতে চায় না দোকানদার। তবে জীবন চালাতে বিক্রি করতে হয় খেলনা। বিক্রি করব তারপর খাইতে পারমু। এখন আর আগের মতো মাটির কাজ করতে পারি না। আমার শরীরও ভালো না, প্রায় সময়ই অসুস্থ থাকি। অসুস্থ শরীর নিয়ে কিছু কিছু সময় স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে, অনেক সময় হাট-বাজারে ও স্কুলের সামনে বিক্রি করি। খেলনা বিক্রি করে দু-এক বেলা পেলে খাই, না পেলে নাই। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি- যতদিন বেঁচে থাকি আমরা যেন দু-এক বেলা খেয়ে যেতে পারি। আমরা তো আর অন্য কোনো কাজ করতে পারি না।’

আরও পড়ুন : প্রবাসী দুই ছেলের দালানে ঠাঁই হচ্ছে না শতবর্ষী বাবার

কালবেলার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কথাগুলো বলছিলেন ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ মজিদ উদ্দিন। নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের কালিকাপুর জুম্মাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি।

সরেজমিনে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে দেখা যায়, ক্রেতাদের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন মজিদ উদ্দিন। চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। কেননা, এসব খেলনা বিক্রি করেই সংসারের চাকা ঘুরান তিনি। কেনেন চাল, ডাল ও তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। এই বৃদ্ধকে দেখে মনে হচ্ছে যেন তিনি মুখ ফুটে বলতে পারছেন না যে, ‘আমি খুব কষ্টে আছি। দুটো খেলনা কিনে নিয়ে যাও, তোমরা কিনলেই আমার দু’মুঠো ভাতের জোগাড় হবে।’ বৃদ্ধের চোখের চাহনিতে কী এক তীব্র আঁকুতি।

আরও পড়ুন : ছেলেরা থাকেন দালানে, ঝুপড়িঘরে ঠাঁই হলো মায়ের

এদিকে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে বৃদ্ধ মজিদ উদ্দিনকে আজীবনের জন্য বয়স্কভাতা কার্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সামান্য টাকা দিয়ে কী আর সংসার চলে। বাড়িতে চালের অপেক্ষায় আছেন মজ্জিদ উদ্দিনের স্ত্রী ফুলতি বেগম।

কথা বলে জানা গেছে, মজিদ উদ্দিনের দুই ছেলে বিয়ের পর বউকে নিয়ে থাকেন আলাদা। খোঁজখবরও নেন না বৃদ্ধ মজিদ উদ্দিনের। জীবন সংগ্রামে মজিদ উদ্দিন যেন এক লড়াকু সৈনিক।

আরও পড়ুন : চাকরির আশায় গণভবনের দিকে তাকিয়ে নজরুল

বৃদ্ধ মজিদ উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘সারাদিন বেচা-বিক্রি করে যা উপার্জন হয়, তা দিয়েই চলে সংসার। অভাব-অনটনের সংসারে গরুর মাংস খাইনি অনেক দিন। ছেলেদের কষ্ট করে বড় করেছি। তারা এখন আমার খোঁজখবর নেয় না।’

মজিদ উদ্দিনের বড় ছেলে দুলাল জানায়, আমাদের টানাটানির সংসারে অভাবের তাড়নায় আব্বা খেলনার জিনিস বিক্রি করে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সবাইকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব: নীরব

‘হামজা আমার দলে হলে বেঞ্চেই বসে থাকত’

লন্ডনে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়রের সঙ্গে বাসস চেয়ারম্যানের মতবিনিময়

আফগানদের কাছে হারার পর যা বললেন মিরাজ

অল্প পুঁজি নিয়ে আফগানদের সাথে পারল না বাংলাদেশ

‘দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে’

রাবেতাতুল ওয়ায়েজীনের সঙ্গে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মতবিনিময়

ডিএনসিসি এলাকায় টাইফয়েডের টিকা পাবে ১৩ লাখ শিশু

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৯ কোটি ডলার

৭ বছর পর শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারত করলেন খালেদা জিয়া

১০

ফার্মগেটে ককটেল বিস্ফোরণ

১১

কালবেলার সংবাদের পর স্বপ্নের রঙিন ঘরে শাহারবানু

১২

আখিরাতের কল্যাণ নিশ্চিতে কাজ করছে জামায়াত : মুজিবুর রহমান

১৩

রাজধানীতে তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারের রেকর্ডেড ভিডিও প্রদর্শন

১৪

জবাব দিতে পিএসসিকে আলটিমেটাম

১৫

অসদাচরণের অভিযোগে বদলি চিকিৎসক দম্পতি

১৬

সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ

১৭

শহীদ জিয়ার মাজারে দোয়া করলেন খালেদা জিয়া

১৮

নোয়াখালী বিভাগ চাইলেন ‘কাবিলা’

১৯

বেথ মুনির রেকর্ডে অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত জয়

২০
X