‘আমি ওই দিন (৭ ডিসেম্বর) জ্ঞাতসারে বক্তব্য দেইনি। আমার বক্তব্যের জন্য আমি অনুতপ্ত।’ বিচারকদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্যের অভিযোগ শুনানির এক পর্যায়ে বিচারপতির কাছে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে আইন-আদালত থাকবে। আর আদালতের প্রতি আমার সব সময় শ্রদ্ধা আছে এবং তা ভবিষ্যতেও থাকবে।
বিচারকদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর শুনানির সময় বিচারপতির নিকট এ কথা বলেন। বিচারকদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য ও আদালত অবমাননা রুলের চূড়ান্ত রায় পিছিয়ে (১ আগস্ট) নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ শুনানির এক পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নুরুল হক নুরকে জিজ্ঞাসা করেন- আপনি কী ২৮ অক্টোবরের আগে বক্তব্য দিয়েছেন, না এরপর বক্তব্য দিয়েছেন। জবাবে নুর বলেন- না এর পরে বক্তব্য দিয়েছি। তখন আদালত বলেন, একজন সচেতন রাজনীতিবিদ হিসেবে এ রকম বক্তব্য দেওয়ার পরদিন গণমাধ্যমে সংশোধনী কেন দিলেন না।
আদালতে ভিপি নুরের পক্ষে আইনজীবীরা বলেন, নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে এবারই প্রথম আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে। ভবিষ্যতে আদালত নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি আরও সচেতন থাকবেন বলে আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করা হয়। আদালতে শুনানি শুরু হওয়ার আগেই নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। আমরা ক্ষমা প্রার্থনার দুটি আবেদনও জমা দিয়েছি। এদিকে বিচারপতি নুরকে উদ্দেশ করে বলেন, একজন রাজনীতিবিদের কথায়-কাজে সচেতনতা থাকা জরুরি। আদালতের মর্যাদা রক্ষা সব নাগরিকের দায়িত্ব। রাজনীতিবিদের কথায় উসকানি থাকলে, তার বিরূপ প্রভাব সাধারণ মানুষ বা কর্মীর মধ্যে পৌঁছে যায়। এ বিষয়ে সবার সতর্ক থাকা দরকার।
আদালতে ভিপি নুরের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। প্রসঙ্গত, গত বছর ২৮ অক্টোবরে বিএনপি ও সমমনাদের ডাকা হরতাল-অবরোধের সমর্থনে রাজধানীতে এক সমাবেশে আদালতের বিচারকদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছিলেন নুর। নুরের আপত্তিকর বক্তব্য নিয়ে একটি দৈনিক পত্রিকা প্রতিবেদন প্রকাশ করে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর। এরপর নুরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার একটি অভিযোগ প্রধান বিচারপতি বরাবর উপস্থাপন করা হলে, প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এরপর হাইকোর্ট গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রুল জারি করে নুরকে তলব করেন।
মন্তব্য করুন