

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থা কাটছেই না। তপশিল অনুযায়ী গত ১ নভেম্বর এ নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের আদেশে তা স্থগিত হয়ে যায়। এবার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আপিল বিভাগের আদেশ অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ অভিযোগে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের প্যানেল লিডার এসএম নুরুল হক ও রিটের বাদী মোহাম্মদ বেলালকে গত সোমবার ইউনাইটেড বিজনেস ফোরামের পরিচালক প্রার্থী আকতার পারভেজের পক্ষে তার আইনজীবী মোহাম্মদ আব্দুল হাই আইনি নোটিশ দেন।
তবে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হয়।
নোটিশে বলা হয়, ৩০ অক্টোবর আপিল বিভাগ টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপের প্রতিনিধিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিবাদী করার নির্দেশনা দিলেও আপিল বিভাগের সে আদেশ অমান্য করেছেন রিটের বাদী মোহাম্মদ বেলাল। তার এই বিলম্ব ও এড়িয়ে যাওয়ার আচরণ থেকে স্পষ্ট, তার উদ্দেশ্য ছিল অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে ব্যাহত করা। আরেক নোটিশ প্রাপক এসএম নুরুল হক চেম্বার নির্বাচন বানচাল করার অভিযোগ তুলে চট্টগ্রামে সভা-সমাবেশ করেছেন।
এসএম নুরুল হক সমাবেশে দাবি করেছেন, নির্বাচন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বন্ধ করেছে। অথচ বাস্তবে তারাই একের পর এক মামলা করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করেছেন। এতে তাদের দুরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্য আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। নোটিশে নুরুল হককে ক্ষমা চাওয়ার জন্যও বলা হয়।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমদের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চ গত ৩০ অক্টোবর সর্বশেষ নির্দেশনায় ৪টি ক্যাটাগরির সবগুলোতেই চট্টগ্রাম চেম্বার নির্বাচন স্থগিত করেন। একই সঙ্গে চেম্বার নির্বাচনে টাউন অ্যাসোসিয়েশন এবং ট্রেড গ্রুপ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করতে ১৪ দিন সময় বেঁধে দেন। সেই আদেশে বিবদমান ৬টি পক্ষকে বিবাদী করতে বলা হয় আদেশপ্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
নোটিশে বলা হয়, সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের প্যানেল লিডার নুরুল হক সমাবেশে দাবি করেছেন, নির্বাচন উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের অন্তর্বর্তী আদেশ অনুযায়ী হতে হবে, যেখানে শুধু টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপগুলোকে বাদ দিতে হবে। যদিও আপিল বিভাগ সরাসরি হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন করে পুরো নির্বাচন স্থগিত করেছেন, যতক্ষণ রিট পিটিশন মামলায় জারি করা রুলের নিষ্পত্তি না হয়। নুরুল হকের এ দাবি সরাসরি বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ; যা আদালত অবমাননা। এ বক্তব্য আদালতের কার্যক্রমকে অবমূল্যায়ন করেছে, বিশেষ করে আপিল বিভাগের নির্দেশনাকে।
নোটিশে আরও বলা হয়, আদালতের কার্যক্রমকে অবমূল্যায়ন করে দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করা, নিঃশর্ত ক্ষমা প্রকাশ এবং আপিল বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে এ নোটিশ জারি করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে রিটের বাদী মোহাম্মদ বেলাল দাবি করেছেন, তারা আদালতের আদেশ অনুযায়ী কাজ করেছেন। আদালত অবমাননাকর কিছু করলে সেটা সংশ্লিষ্ট আদালত দেখবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নোটিশের বিষয়ে জানতে চাইলে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের প্যানেল লিডার এস এম নুরুল হক বলেন, এমন কোনো নোটিশ আমি পাইনি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে আইনের প্রক্রিয়া যেটা, সেটা আইনের মাধ্যমেই শেষ হবে। আর ভোটের প্রক্রিয়া ভোটারের ভোটের মাধ্যমেই শেষ হবে।
মন্তব্য করুন