নেত্রকোনায় সাখাওয়াত হোসেন ওরফে আরাফ নামের আট বছরের এক শিশুকে হত্যার দায়ে বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বুধবার (১৪ মে) বিকেলে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান এ রায় প্রদান করেন।
সাজাপ্রাপ্ত মো. এরশাদ মিয়া (৪২) সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মো. আবদুল জব্বার মুন্সীর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় এরশাদ মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন। কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি আবুল হাসেম।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৪ বছর আগে এরশাদ মিয়ার সঙ্গে ময়মনসিংহের গৌররীপুর উপজেলার সাততি গ্রামে মতিউর রহমানের মেয়ে আফরোজা আক্তারের সঙ্গে বিয়ে। বিয়ের দুই বছর পর তাঁদের দাম্পত্যজীবনে জমজ সন্তানের জন্ম হয়। এরমধ্যে একটি সন্তান মারা যায়। সন্তানের জন্মের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
একপর্যায়ে আফেরোজা ছেলে শাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে তার মামার বাড়ি সদর উপজেলার কান্দুলিয়ায় গিয়ে বসবাস করেন। সেখানে তিনি সেলাইয়ের কাজ করে ছেলেকে নিয়ে সংসার চালাতেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের ভরণ-পোষণসহ খোঁজখবর না নেয়ায় আফরোজা ২০২০ সালের নভেম্বরের শেষ দিয়ে এরশাদকে তালাক দেন।
এতে এরশাদ ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি দুপুরে কান্দুলিয়ায় আফরোজার ঘরে যান। এ সময় ওই ঘরে ছেলে শাখাওয়াত হোসেন অবস্থান করছিল। এরশাদ ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে তার ছেলেকে শ্বাসরোধসহ মারধর করে হত্যা করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে এরশাদকে আটকসহ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় আফরোজা বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৫ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আজ আদালত এ রায় প্রদান করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন পূরবী কুণ্ড।
মন্তব্য করুন