পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচন আয়োজনে আর কোনো আইনগত বাধা নেই। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, আগামী ১৭ জুলাই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের ভোটার তালিকা সংশোধনের নির্দেশ ও তপশিল স্থগিতসংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এক মেয়র প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের ফলে যথাসময়ে ভাণ্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এম কে রহমান। তিনি বলেন, নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর ভোটার তালিকা চ্যালেঞ্জ করে মামলা করার সুযোগ আইনে নেই। কিন্তু রিটকারী আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন। ওই মামলায় ভোটার তালিকা সংশোধনের আদেশ দিয়ে নির্বাচনের তপশিল স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এই আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করি। চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেয়। ফলে যথাসময়ে ভাণ্ডারিয়া পৌর নির্বাচন হতে আর কোনো আইনগত বাধা নাই।
গত ৩১ মে ভাণ্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী আগামী ১৭ জুলাই এই পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু ইসির ঘোষিত তপশিল চ্যালেঞ্জ করে একের পর এক রিট মামলা করা হয় হাইকোর্টে। এর মধ্যে তিনটি মামলায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর কোনো স্থগিতাদেশ দেয়নি হাইকোর্টের একাধিক বেঞ্চ। তবে আরেকটি রিট মামলায় ভোটার তালিকা ২৮ দিনের মধ্যে সংশোধনের আদেশ দিয়ে নির্বাচনের তপশিল স্থগিতের আদেশ দেয় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আব্দুল হালিম হাওলাদারের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ জুন এ আদেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এ আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করেন পৌর নির্বাচনে জাতীয় পার্টি-জেপির মেয়র প্রার্থী মো. মাহিবুল হোসেন। তার নির্বাচনী প্রতীক ‘বাইসাইকেল’।
তার পক্ষে শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম কে রহমান বলেন, হালিম হাওলাদারের ভাই মাসুম হাওলাদার ভোটার তালিকা সংশোধনের নির্দেশনা চেয়ে রিট মামলা করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সেই মামলায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর কোনো ধরনের স্থগিতাদেশ দেয়নি। তবে হালিম হাওলাদারের রিট মামলায় হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। কিন্তু ভোটার তালিকা আইন-২০০৯ এর ১৪ ধারা ও ভোটার তালিকা বিধিমালা-২০১২ এর ২৬ বিধি অনুযায়ী নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর ভোটার তালিকা সংশোধন বা নির্বাচন চ্যালেঞ্জ করে মামলা করার কোনো সুযোগ নাই। এরপরও এ ধরনের মামলা করে পৌর নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। তাই হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করার প্রার্থনা করি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেন।
মন্তব্য করুন