

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী বিশ্বজিৎ চন্দ্র বর্মনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। তিনি কলেজের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের (২০২৩-২৪) সেশনের শিক্ষার্থী।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে গত ২৬ নভেম্বর ক্যাম্পাস থেকে বিশ্বজিৎ চন্দ্র বর্মনকে আটক করা হয়। পরে তাকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। মামলা দায়েরের পর ২৭ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ১ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার এসআই কামাল হোসেন তার পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামির উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য করেন আদালত।
শুনানিকালে আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত ৬ মাসে দেশে যত ধর্ম অবমাননার ঘটনা ঘটেছে, ১৫ বছরেও তা ঘটেনি। এর কারণ একটায় ফ্যাসিজম ফিরিয়ে আনা। দেশে দাঙ্গা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে শিক্ষার্থীদের আবার আন্দোল করে রাস্তায় নামানো। কে ঘটনা ঘটিয়েছে, কলকাঠি কে নাড়ছে তা জানার জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।
বিশ্বজিৎ চন্দ্র বর্মনের পক্ষে তার আইনজীবী গুলজার হোসেন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, এ মামলার বাদীর সঙ্গে একটা মেয়েকে নিয়ে বিশ্বজিতের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে তাকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তার রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি। শুনানি শেষে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয় বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই মোক্তার হোসেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বিশ্বজিৎ ফারিয়া আক্তার নামে একটি ফেসবুক আইডি খোলে। সেখানে মহানবীতে নিয়ে কটূক্তি করে। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ওয়াহিদ সাব্বির ২২ নভেম্বর ক্যাম্পাসে বসে মহানবী কটূক্তির বিষয়টি দেখে। শাহ মোহাম্মদ নামক ফেসবুক আইডির সঙ্গে চ্যাটিংকালেও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি করে। পরে কলেজের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে আইডির মালিককে খুঁজতে থাকে। আফিফ নামে তিতুমীর কলেজের এক শিক্ষার্থীর ম্যাসেঞ্জার থেকে ফারিয়া আক্তার আইডিতে ভিডিও কল দিলে বিশ্বজিৎ রিসিভ করে।
গত ২৬ নভেম্বর তাকে আটক করে শিক্ষার্থীরা। পরে তাকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ওয়াহিদ সাব্বির ২৬ নভেম্বর বনানী থানায় মামলা করেন।
মন্তব্য করুন