উঠতি বয়সী তরুণীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ ও আপত্তিকর ছবি-ভিডিও তৈরি করত একটি চক্র। এরপর সেগুলো দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে আদায় করতো লাখ লাখ টাকা। পেশাদার এই অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ চালিয়ে আসছিল। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে এই পেশাদার অপহরণকারী চক্রের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলো- মো. মাসুম পারভেজ (৩৮), মো. সোলাইমান হোসেন (৩৮), শফিকুল ইসলাম সৌরভ (২৭), মোছা. মায়া (২৫) ও মোছা. রুলি খানম (১৯)। এ সময় তাদের থেকে বিভিন্ন মানুষের মুক্তিপণ বাবদ আদায় করা এক কোটি ৪১ লাখ টাকা, ৬০ পিস ইয়াবা, দুটি সিসি ক্যামেরা এবং তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
বুধবার বিকাল সোয়া ৩টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানার ১১ নম্বর সেক্টরের ১০/বি রোডের একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মিরপুরের মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। গত বুধবার অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ওই ছাত্রীর মাকে ফোন করে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। ভুক্তভোগীর মা বিষয়টি উত্তরা পশ্চিম থানাকে অবহিত করেন। সংবাদ পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারী চক্রটিকে শনাক্ত করে। পরবর্তীতে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের ১০/বি রোডের বাসাটি থেকে অভিযান চালিয়ে অপহৃত ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। একই বাসা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের সহযোগী কয়েকজন দৌড়ে পালিয়ে যায়।
পলাতকদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি পৃথক মামলা করা হয়েছে।
ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে- গ্রেপ্তাররা একটি পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সদস্য। তারা বিভিন্ন বয়সের কিশোরীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে তাদের আটকে রেখে বিভিন্ন নগ্ন ভিডিও ও ছবি ধারণ করত এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করত। গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন