চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলেই আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীর মাথা ফেটে গেছে। এ ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে ক্যাম্পাস। আশঙ্কায় রয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৫ জুলাই) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মাহবুবুর রহমান। এক হাত লম্বা কাট দিয়ে ওই শিক্ষার্থীর মাথায় আঘাত করেন বোটানি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাইম আরাফাত। তিনি শাখা ছাত্রলীগের উপ গ্রুপ সিক্সটি নাইন গ্রুপের অনুসারী। মারধরের একটি ভিডিও ফুটেজ কালবেলার কাছে এসে পৌঁছেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা দুপুর আড়াইটার শাটলে করে যাওয়ার সময় কোটা আন্দোলনের সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিকে তুলে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাটল ট্রেনের চাবি ছিনিয়ে নেয় বলে জানান ষোলশহর স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদিন।
এ সময় সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করার এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফির ছাত্রত্ব বাতিল করতে চাপ সৃষ্টি ও মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে রাফির মুক্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও বেশ কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার হয়ে আসার সময় আবারও ছাত্রলীগের হাতে হামলার শিকার হয়। এ সময় এক শিক্ষার্থীর মাথা ফেটে যায়।
হামলার শিকার এক মেয়ে শিক্ষার্থী বলেন, রাফিকে যখন শাটল থেকে ধরে নিয়ে আসা হয় তখন আমরা কয়েকজন মিলে মিছিল করতে করতে শহীদ মিনারের দিকে আসি। পরে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন মিলে আমাদের ওপর চড়াও হয়। আমি নিজেও আহত হই। একজন ভাইকে তো মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে।
এদিকে সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার প্রতিবাদে এবং কোটা বৈষম্য নিরসনে এক দফা দাবিতে বিকেল ৪ টার দিকে চট্টগ্রাম ষোলশহর রেল স্টেশনে বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ করেছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।
কোটা আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক আবুল ফয়েজ মামুন জানান, সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীদের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান যেন দাবি মেনে নিয়ে পড়ার টেবিলে ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তিরও দাবি জানান।
হামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিষয়ে ইউজিসি থেকে একটি নির্দেশনা এসেছে। যাঁরা এ নির্দেশনা মানবে, আমি তাঁদের পক্ষে। আর হামলার বিষয়ে আমি কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।
মন্তব্য করুন