ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘ঐক্যের প্রতীক হিসেবে মাঠে রয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’

ঢাকা কলেজে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ‘ঢাকা কলেজের অবদান’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি : কালবেলা
ঢাকা কলেজে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ‘ঢাকা কলেজের অবদান’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি : কালবেলা

জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মাঠে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।

বুধবার (১১ নভেম্বর) ঢাকা কলেজের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ‘ঢাকা কলেজের অবদান’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো ক্রিয়াশীল সংগঠন না। ফ্যাসিবাদবিরোধী যে শক্তিগুলো যেমন- ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, অধিকার পরিষদসহ সবাইকে একত্রিত করার জন্য এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মাঠে রয়েছে।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমাদের আওয়ামী লীগের জাহেলিয়াতের যুগ পার করতে হয়েছে। এখন আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পেরেছি কিন্তু কখনো ভাবতে হয়নি আমাদের বাসায় পুলিশ যাবে। আমরা অধিকাংশ সময় দেখি দেশের কিছু টকশোজীবীরা আহাজারি করে বলেন, চারপাশে আমরা কী পেলাম? দেশ রসাতলে গেছে! ক্ষোভ-কষ্ট তারা বর্ণনা করতে থাকে। কিন্তু গত ১৬ বছরে এ আহাজারি অন্যায়, গুম, খুন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে টকশোতে প্রকাশ করতে দেখিনি। তরণ প্রজন্মের ক্রোধ রয়েছে যারা ফ্যাসিবাদের হয়ে লিখে গেছে। ক্ষোভ রয়েছে সেকল বিচারপতির বিরুদ্ধে যারা কলম দিয়ে ইনসাফের পরিবর্তে জুলুম লিখেছে।

জুলাই আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আরও বলেন, আমাদের ক্রোধ রয়েছে সেসব শিক্ষকদের প্রতি যারা শান্তি সমাবেশে গিয়ে ফ্যাসিবাদের পক্ষে কথা বলেছে, যেসব আমলারা ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রাখতে ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করেছে, যেসব ব্যাসায়ীরা ‘মাদার অব টেরর’ শেখ হাসিনার কাছে গিয়ে উন্নয়নের বাণী শুনিয়েছে, যেসব পুলিশ জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র তাক করেছে নিরস্ত্র জনগণের প্রতি এসব দোসরদের প্রতি ক্রোধ রয়েছে তরুণ প্রজন্মের।

নিহত ও আহত পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে হাসনাত বলেন, যেসব মায়েরা সন্তান হারিয়েছেন, যারা এতিম হয়েছে, ভাইবোন হারিয়েছে, যারা বিধবা হয়েছে- তাদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমাদের ১৬ বছরের আঘাত কিছু বুদ্ধিজীবী-টকশোজীবী যাদের ভারত থেকে ফাইন্যান্স করা হয় তাদের কথা শুনে ভুলে গেলে চলবে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজনীতি প্রসঙ্গে এই আহ্বায়ক বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো ক্রিয়াশীল সংগঠন না বরং ফ্যাসিবাদবিরোধী যে শক্তিগুলো ছিল ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, অধিকার পরিষদসহ সবাইকে একত্রিত করার জন্য এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মাঠে রয়েছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে বুঝতে হবে আমরা কোনো তথাকথিত কনভেনশনাল রাজনৈতিক ধারাবাহিকতার মধ্যে নেই। পরে বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। কোনো শক্তি যদি মনে করে তরুণ প্রজন্মকে মাইনাস করে নিজেরা ক্ষমতায় যাবে তাহলে তারা ভুল ভাবছে।

জুলাই আন্দোলনে ঢাকা কলেজের অবদান নিয়ে খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, জুলাই আন্দোলনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা ছিলেন আমার সহযোদ্ধা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের পাশে পেয়েছি। আন্দোলনের মধ্যেও ঢাকা কলেজের রাকিব ভাইয়ের সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল। দেশের প্রত্যেক ক্লান্তিকালে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের অনেক অবদান ছিল। আমাদের দেশে যখন সংকট এসেছে তখনই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমেছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সমন্বয়ক রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ঢাকা কলেজ বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই গণঅভ্যুত্থানে ঢাকা কলেজের অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানেও ঢাকা কলেজের ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানেও আমরা তা প্রত্যক্ষ করেছি। ঢাকা কলেজ ছাড়া আন্দোলন সফল করা সম্ভব হতো না। এই আন্দোলনে নারী পুরুষ সকলেই ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। যখন আমাদের ঢাবির হলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখন আমরা কয়েকটা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল হই, তার মধ্যে ঢাকা কলেজ অন্যতম। আমাদের আন্দোলন চালানোর জন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক বেশি বড় ভূমিকা পালন করে। তেমনি ঢাকা কলেজও প্রথম সারিতে থেকে ভূমিকা পালন করেছে। আমরা এমন এক দেশের স্বপ্ন দেখি যেখানে নিজেদের নতুন করে আবিষ্কার করব, নতুন করে দেশ এবং সমাজের জন্য কাজ করব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বঞ্চিত কর্মকর্তাগণের আবেদন পর্যালোচনা কমিটির ২য় প্রতিবেদন পেশ

হাসপাতালে গিয়ে মির্জা ফখরুলকে পেলেন না জামায়াতের প্রতিনিধি দল

দূরশিক্ষা ও বিজ্ঞানের মহীরুহ ড. শমশের আলীর মহাপ্রস্থান : এক জ্ঞানতাপস

একযোগে এনসিপির ১৫ নেতার পদত্যাগ

হাবিপ্রবির ১২ হাজার শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ ৬ লাখ টাকা 

শিশুদের হাঁপানি সম্পর্কে যা যা জানা জরুরি

‘অপরাজেয় ৭১’ ও ‘অদম্য ২৪’ নামে ডাকসু নির্বাচনে বামপন্থিদের প্যানেল ঘোষণা

‘সাধারণ ছুটি’ না হয়েও আজ ছুটি যেসব প্রতিষ্ঠান

পুতিনের মলমূত্রও বিদেশ থেকে রাশিয়ায় বয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কেন?

মালদ্বীপে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

১০

হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার অভিনেতা সিদ্দিক

১১

ফিরছেন দীপিকা 

১২

আগামী ৫ দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল অধিদপ্তর

১৩

নিজেই বাড়াচ্ছেন স্ট্রোকের ঝুঁকি, জানুন কীভাবে

১৪

ধর্ষণের অভিযোগের পর চাপের মুখে বিয়ে

১৫

নেতানিয়াহু ও নিজেকে ‘যুদ্ধের নায়ক’ বললেন ট্রাম্প

১৬

সেই তন্বীর সম্মানে ডাকসুর গুরুত্বপূর্ণ পদ ছেড়ে দিল ছাত্রদল

১৭

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ

১৮

মাছ চাষের নামে বাঁধ, পানির তলে শত বিঘা আমন ধান

১৯

ঘরে বসেই ঘন ও স্বাস্থ্যবান চুল পেতে মেনে চলুন এই ৭ টিপস

২০
X