ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা শেষে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের ৮ কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকাল নয়টায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী শাহদুল্লাহ সিদ্দিকী ও তাসিন আজাদ। জিয়াউর রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী সাব্বির খান, শামীম রেজা, আকিব মাসুদ, পারভেজ হোসেন ও আবদুল কাদের এবং শেখ রাসেল হলের ছাত্রলীগ কর্মী আশিক কুরাইশী।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ কর্মীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে গত ২০ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু পরিষদের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের পাশে আমবাগানে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা। একপর্যায়ে এক কর্মী আরেক কর্মীকে ছুরিকাঘাত করেন।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, আলোচনা সভার শুরুতে মিলনায়তনে ঢুকতে গিয়ে কথা-কাটাকাটি হয় আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী শামীম রেজা ও শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থী ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আশিক কোরেশির মধ্যে। পরে এ ঘটনার জেরে আলোচনা সভা শেষে মিলনায়তনের বাহিরে এসে ফের উভয়ের মাঝে কথা-কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে জিয়াউর রহমান হল ও শেখ রাসেল হলের ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ঘটনার একপর্যায়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আকিবের ছুরিকাঘাতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একই বর্ষের মুফতাইন আহমেদ সাবিক আহত হন। এরই রেশ ধরে কয়েকদফায় চতুর্মুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন।
এদিকে শেখ হাসিনা হলে নবীন ছাত্রী ফুলপরী নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচ অভিযুক্তকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার (২১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১২ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে ৪ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। ভুক্তভোগী ফুলপরীর ভাষ্য, সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা তাকে নির্যাতন করেন। এসময় তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিওধারণ, গালাগাল ও ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। পরে ফুলপরী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় রিট হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি কিছু নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
মন্তব্য করুন