পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আমাদের যেসব গবেষণা সক্ষমতা রয়েছে সেটা অনেক উন্নয়নশীল দেশের নেই। আজ আপনাদের (ঢাবির গবেষকদের) গবেষণা দেখে আমার মনে হচ্ছে আমরা সত্যিই পারব।
শুক্রবার (০২ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ৩০০ গবেষক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘ডিউ রিসার্চ অ্যাক্সিলেন্স রিকগনিশন’ প্রোগ্রামের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রমকে উৎসাহ প্রদান, গবেষণায় উৎকর্ষ সাধন এবং গবেষকদের অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে এই প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, আমার ধারণা ছিল, বাংলাদেশে এখন আর আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা হয় না। কিন্তু আজকের এ অনুষ্ঠান আমার ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করেছে। আমাদের এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের স্বীকার করতেই হবে আমাদের গবেষণা উপকরণের সংকট রয়েছে। তারপরও আমাদের যে সক্ষমতা রয়েছে সেটা অনেক সেটা অনেক উন্নয়নশীল দেশের নেই। এটিকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে।
অনুষ্ঠানটি দুটি অধিবেশনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ। এই অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, যারা গবেষণা করেন তাদের সাপোর্ট দিতে হয়। উন্নত বিশ্বে প্রতিনিয়ত এই সাপোর্ট দেওয়া হয়। আমাদেরও এই সাপোর্ট দিতে হবে আর সৃষ্টিশীল গবেষণার দিকে নজর দিতে হবে। শিক্ষা ও গবেষণায় উন্নতি করলে বাংলাদেশও অনেক উন্নত হবে।
অধিবেশনে উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগ বিষয়ক মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। দ্বিতীয় অধিবেশনে অতিথির বক্তব্যে নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির বলেন, আমাদেরকে মাতৃভাষায় জ্ঞানচর্চার প্রতি এগিয়ে আসতে হবে। জ্ঞান-বিজ্ঞান ঠিকমতো বিকশিত করতে হলে মাতৃভাষায় জ্ঞানচর্চার কোনো বিকল্প নেই। আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে আহ্বান জানাব, এ বিষয়ে দৃষ্টিপাত করতে।
ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে গবেষণা কেবল নিজের জন্য নয়, গবেষণা হবে সমগ্র মানবজাতির জন্য, পৃথিবী বদলানোর জন্য। আজকের এই অনুষ্ঠানকে স্বাগত জানাই। কেননা এর মাধ্যমে আমাদের গবেষকদের স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।
এই অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিয়তই আর্থিক সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এ জন্য আমরা অন্য খাতের বরাদ্দ কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই খাতে (গবেষণা) আমরা হাত দিইনি। আজকের এই অনুষ্ঠান আমাদের গবেষকদের স্বীকৃতি দেওয়ার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। আগামীতে আমরা আরও বৃহৎ পরিসরে তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করব।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কেডিএস গ্রুপের এমডি সেলিম রহমান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি কামরান টি রহমান, ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সদস্য সৈয়দ আমিনুর রহমান প্রমুখ।
মন্তব্য করুন