বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় জড়িত ৭১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ মামলায় এরই মধ্যে ডেসপাস শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোক্তারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৭ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় গেট থেকে এ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (৬ মে) রাত ২টার দিকে নগরীর তাজহাট থানায় মামলাটি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হারুন অর রশিদ।
মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম সরদার।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আসামিরা হত্যার উদ্দেশে আক্রমণ ও ধংসযজ্ঞ সংঘটিত করে। ১১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাঈদের ওপর আক্রমণ করা হয়। ১৬ জুলাই পুলিশ ও বহিরাগত অজ্ঞাতনামা ৮০ থেকে জন আসামি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি, লাঠি সোডা, লোহার রড, ছুরি, রামদা, কিরিচসহ আগ্নেয়াস্ত্র সজ্জিত হয়ে পর্যায়ক্রমে হামলা করেন। পুলিশও নিরস্ত্র ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি গুলি বর্ষণ করে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসানসহ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ৩৬ জনকে ১ থেকে ৩৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। যুবলীগের রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সিদ্দিকীসহ বহিরাগত ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ১৩ জনকে আসামি হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মণ্ডল ও গণিত বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমান আসামি হয়েছেন। ৫ আগস্টের শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তারা আত্মগোপন করেছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারী আসামির তালিকায় আছেন।
রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক উপকমিশনার আবু মারুফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ উপকমিশনার শাহানুর আলম পাটোয়ারী সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার আল ইমরান হোসেন, আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, আমির আলী আসামি হয়েছে। এর মধ্যে সুজন চন্দ্র রায় ও আমির আলী কারাগারে আছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হারুন অর রশিদ এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের পরে জানাবেন বলে জানান। তবে মামলার এজাহারে তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি ও সিন্ডিকেট কমিটির অনুমোদন ও অফিসিয়াল প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে।
তাজহাট থানার ওসি শাহ আলম সর্দার বলেন, এ মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, পুলিশ ও ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আছেন। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৮০/১০০ জনকে। এরই মধ্যে মোক্তারুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন