বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর আইন বিভাগে একজন প্রভাষকের নিয়োগকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সৃষ্ট বিতর্ক ও সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খুলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকের অতীত কর্মকাণ্ড ও নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (জেনারেল) এই তথ্য জানিয়েছে। তিনি জানান, সম্প্রতি আইন বিভাগের প্রভাষক পদে একজন শিক্ষকের নিয়োগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে মানহানিকর, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপব্যাখ্যা ও অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন এবং দুঃখজনক
বিইউপি সবসময় মেধা, যোগ্যতা, পেশাদারত্ব ও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগে বদ্ধপরিকর। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে দুই বছরের জন্য শিক্ষানবিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। এই সময়ে তার বিরুদ্ধে আচরণগত, আইনগত ও নিরাপত্তাজনিত বিষয়ে পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করা হয়। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ স্থায়ীভাবে কার্যকর হয় না।
‘আলোচিত শিক্ষকের কর্মকাণ্ড ও নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বিইউপির কাছে আগে কোনো তথ্য ছিল না। অভিযোগটি দৃষ্টিগোচর হওয়ার পরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটির মতামতের ভিত্তিতে বিইউপির প্রচলিত আইন ও বিধি-বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ডিনকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ‘মানহানিকর, অবান্তর ও অপব্যাখ্যাসহ আক্রমণাত্মক’ তথ্য প্রচারের অভিযোগ তুলেছে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে এসব তথ্য ছড়াচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।’
বিইউপি সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত একটি স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখ করে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি সর্বদা স্বচ্ছতা বজায় রেখে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
জানা গেছে, নিয়োগপ্রাপ্ত ওই শিক্ষকের নাম মৌমিতা রহমান ঈপ্সিতা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ছাত্রজীবনে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। পারিবারিকভাবেও তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার বাবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে আওয়ামী লীগের ব্যানারে নির্বাচিত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই ব্যাখ্যা এবং তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা বিতর্কের জল কত দূর গড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন