আবাসন ভাতা, হল নির্মাণসহ বিভিন্ন দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরই প্রেক্ষিতে গত এপ্রিল মাসের ২০ তারিখে বেড ও বালিশ নিয়ে উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান নেন আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী শের আলীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। ওই দিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের একটি কক্ষে অবস্থান শুরু করেন তারা। এরপর থেকে তিন সপ্তাহ পার হলেও মেডিকেল সেন্টারের ওই কক্ষ ছাড়েননি শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, মেডিকেল সেন্টারের ওই কক্ষে অবস্থান করছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। থাকার জন্য সেখানে টানানো হয়েছে মশারি। এছাড়া দড়ি বেঁধে কাপড় শুকানোর ব্যবস্থাও করেছেন তারা। এর আগে মেডিকেলের ওই কক্ষের একটি পাত্রে সিগারেটের ফিলটার ও ছাই রাখা একটি ভিডিও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে মেডিকেলে অবস্থানরত অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সোহান বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা মেডিকেল সেন্টার ছাড়ব না। মেডিকেল সেন্টারে সিগারেটের ফিলটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলোর বিষয়ে আমি জানি না।
অবস্থানরত শিক্ষার্থী শের আলী বলেন, আমরা মেডিকেল সেন্টার থেকে খুব তাড়াতাড়ি চলে যাব। আন্দোলনের অংশ হিসেবে এখানে ছিলাম, এখন আর যেহেতু কাঁথা-বালিশ কর্মসূচি নেই এজন্য ২/৩ দিনের মধ্যে ওটা ছেড়ে দেব।
তিনি আরও বলেন, মেডিকেলের আমরা যে রুমে আছি এখানে খুব বেশি রোগী আসে না। মোডিকেল সেন্টারের যেখানে ডাক্তার বসে ওখানে দুটি বেড আছে ওখানেই জরুরি চিকিৎসা নেন শিক্ষার্থীরা। মেডিকেল সেন্টারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং সিগারেট সেবনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আসলে এমন কিছু দেখিনি। সিসি ক্যামেরা চেক করলেই সবটা জানা যাবে।
দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীরা। মো. মামুন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আন্দোলনের অনেক ভাষা রয়েছে, এভাবে মেডিকেল ওয়ার্ড দখল করে আন্দোলন চলতে পারে না। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা নতুন করে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল গিয়েছে। সুতরাং মেডিকেলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের উচিত মেডিকেল সেন্টার ছেড়ে দেওয়া।
এ বিষয়ে সেন্টারের উপ-চিকিৎসা কর্মকর্তা মিতা শবনম বলেন, তারা বলছেন তারা আন্দোলনের অংশ হিসেবে অবস্থান করছেন। ফল না পাওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান চালিয়ে যাবেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম, তারা এসে কথা বলেছিলেন, তবুও তারা ওয়ার্ড ছেড়ে যাননি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের একটি ইমারজেন্সি বেড আছে, যেখানে হয়তো কোনো জরুরি রোগী এলে আমরা সেবা দিতে পারি। কিন্তু যদি এমন কোনো শিক্ষার্থী বা একাধিক শিক্ষার্থী আসেন যাদের ওয়ার্ড প্রয়োজন, তখন তো বিষয়টি সমস্যার হয়ে দাঁড়াবে।
মন্তব্য করুন