শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিন, প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানি ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. মামুন অর রশিদকে অপসারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে শিক্ষার্থীদের অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর পরই তাদের অপসারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাসেম স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপণে তাদের অপসারণ করা হয়।
এদিকে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং ট্রাজারারকে অপসারণের খবরে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে। অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারির পর পরই শিক্ষকরা পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান শিক্ষার্থীদের।
মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত তিনটি প্রজ্ঞাপন তিনজনের নাম উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে।
অধ্যাপক শূচিতা শরমিনকের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের আনুমোদনক্রমে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬ এর ১০(২) ধারা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের গত ২৩.৯.২০২৪ তারিখের ৩৭.০০.০০০০.০৭৯.২৫.১৯১.১১-২৯২ নম্বর প্রজ্ঞাপনের (ঙ) নং শর্তানুসারে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. শূচিতা শরমিন, অধ্যাপক, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভাইস চ্যান্সেলর পদ হতে অব্যাহতিপূর্বক তার মূলপদে যোগদানের অনুমতি প্রদান করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। তাছাড়া জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
ঠিক একইভাবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানি, ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদ, চেয়ারম্যান মৌলিক বিজ্ঞান বিভাগ, প্রাণী বিজ্ঞান এবং ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে ট্রেজারার পদ হতে অব্যাহতিপূর্বক মূল পদে যোগদানের অনুমতি প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নসহ ২২ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। পরে ৪ দফা দাবি তোলেন তারা। কিন্তু বার বার আশ্বাস দিয়েও দাবি বাস্তবায়ন করেননি উপাচার্য।
বরং আন্দোলন দমাতে প্রথম শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা এবং পরবর্তী থানায় আরও একটি সাধারণ ডায়েরি করান উপাচার্য। এর প্রতিবাদে উপাচার্যের অপসারণে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন তারা।
দাবি অনুযায়ী সোমবার রাত ১০টা থেকে আমরণ অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই প্রশাসনিক বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করেন চারজন শিক্ষক। এর পরও উপাচার্যকে অপসারণ না করায় মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে সড়ক অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। যা চলে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।
অবরোধ শেষ হওয়ার পর পরই আসে ভিসি, প্রো-ভিসি এবং ট্রেজারারকে অপসারণে প্রজ্ঞাপন।
মন্তব্য করুন