রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক এক শিক্ষার্থীকে রুম থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে দিকে ওই ছাত্রের জিনিসপত্র রুম থেকে বের করে বারান্দায় ফেলে রাখা হয়। ছাত্রলীগের নেতারা ওই শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর হল প্রশাসন আবার তাকে ওই কক্ষেই তুলে দেয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মাহতাব উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ও শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। আর অভিযুক্তমো. মোমিন ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেল থেকেই ওই রুমে অবস্থান করছিলেন মাহতাব। হঠাৎ দুপরে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোমিন ইসলাম ও তার সহযোগীরা ভুক্তভোগীকে বের করে দিয়ে আরেক ছাত্রলীগ নেতাকে তুলে দেন। এসময় তার বিছানাপত্র বারান্দায় ফেলে দেয় মোমিন ও তার সহযোগীরা।
ভুক্তভোগী হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, আমাকে হল প্রাধ্যক্ষ স্যার এই হলের ৩২৬ নম্বর কক্ষে পুনঃবরাদ্দ দিয়েছেন। আজ দুপুর আড়াইটার দিকে শহীদ শামসুজ্জোহা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোমিন ইসলাম দলবল নিয়ে জোরপূর্বক আমাকে টেনে হিঁচড়ে কক্ষ থেকে বের করে দেয়। আমার বিছানাপত্র অন্যত্র সরিয়ে ফেলে দিয়ে অন্যজনকে রুমে তুলে দেয়।
তিনি আরও বলেন, তারা আমাকে হুমকি দিয়েছে যেন আমি আমার বরাদ্দকৃত ৩২৬ নম্বর কক্ষ থেকে ছেড়ে যাই। এখন আমি নিরাপত্তাইীনতায় ভুগছি।
ভুক্তভোগীর বরাদ্দকৃত কক্ষে বর্তমানে অবস্থান করছেন খন্দকার শাহরিয়ার সৌরভ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী ও শহীদ শামসুজ্জোহা হল শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে তার রুমে অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে এই রুমে প্রাধ্যক্ষ স্যার তুলে দিয়েছেন। তাই আমি এখানে অবস্থান করছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোমিন ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। হল প্রাধ্যক্ষ একজনকে বরাদ্দ দিতে চেয়ে অন্যজনকে বরাদ্দ দিয়েছেন। তাই এসমস্যা হয়েছে। আমি যতটুকু জানি হল প্রাধ্যক্ষ সবসময় ছাত্রলীগের পোলাপানদের সঙ্গে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের একজন নেতা ওই কক্ষে অবস্থান করছিলেন। পরে তাকে নেমে যেতে বলা হয়েছে। বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষ মীমাংসা করে দিয়েছেন।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো ইকরামুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। কক্ষটা মাহতাবকেই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুপুরে মাহতাবকে বের করে দেওয়ার খবরটা জানার পর আমি মোমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। মোমিন ওই কক্ষকে তাদের কক্ষ বলে দাবি করলে আমি তখন বলি সব কক্ষ হল প্রশাসন দেখবে। কক্ষটা যেহেতু মাহতাবের বরাদ্দকৃত। তাই সেখানে মাহতাবই থাকবে।
মন্তব্য করুন