ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, ‘আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয় কেবল একাডেমিক প্রতিষ্ঠান না হয়ে সমাজের একটি মৌলিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাক। সে লক্ষ্যে সরকারি নির্ভরতা কমিয়ে, আমাদের নিজস্ব সম্পদ ও সামাজিক সম্পর্ককে কাজে লাগাতে হবে। এই প্রসঙ্গে ঢাবির অ্যালামনাইদের আরও সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’
বুধবার (৩০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘তাজউদ্দিন আহমদ স্মারক বক্তৃতা ২০২৫’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তাজউদ্দিন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে শান্তি স্বর্ণপদক, বৃত্তি ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী ও তাজউদ্দিন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের দাতা শারমিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
স্মারক বক্তৃতা রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম। সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘আমরা আজ একজন সব্যসাচী ব্যক্তিকে সম্মান জানাচ্ছি। যিনি কর্মজীবনে অমোচনীয় অবদান রেখে গেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই পরিবারের সম্পর্ক আরও গভীর ও স্থায়ী হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ঐক্য ধরে রাখা। আমাদের জাতীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকগুলো ’৫২, ’৬২, ’৬৯, ’৭১, ’৯০ এবং সর্বশেষ ’২৪ সাল। এসব আন্দোলনের মধ্যে একটি ধারাবাহিকতা রয়েছে। এগুলোকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘জুলাই আমাদের সামনে কিছু নতুন পথ খুলে দিয়েছে, কিছু অবস্থানে আমরা পৌঁছেছি। তবে এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। আমরা চেষ্টা করছি, ভালো কিছু করার, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও জবাবদিহিতামূলক ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ট্রাস্ট ফান্ড নিয়ে কাজ করা আমার দায়িত্বের অংশ হলেও এ কাজ করতে গিয়ে আমি এক ধরনের সম্মান ও গর্ব অনুভব করি। এসব কাজ শুধু প্রশাসনিক নয়, মূল্যবোধ ও দায়িত্ববোধের জায়গা থেকেও পরিচালিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ আমার কাছে প্রশ্নের ঊর্ধ্বে। যারা এই মহান যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, তাদের প্রতি আমার অসীম শ্রদ্ধা ও গভীর আবেগ রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে স্বর্ণপদক পেয়েছেন শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ইতু আহমেদ, বৃত্তি পেয়েছেন শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোসা. লিমা খাতুন, রচনায় প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মনির হোসেন সিয়াম (প্রথম), বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নূরুদ্দীন মুহাম্মাদ (দ্বিতীয়), শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুমতাহানা হাবীব (তৃতীয়), অর্গানাইজেশন স্ট্রাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিজা (চতুর্থ) এবং ক্রিমিনোলজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আরিফুর রহমান (পঞ্চম)।
মন্তব্য করুন