ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) এলিভেট টকের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান ও শিক্ষার গতিপথ : প্রত্যাশা অর্জন ও আগামী দিন’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় ইনস্টিটিউটের শহীদ ড. সাদাত আলী কনফারেন্স রুমে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্যে দেন- ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম, ড. মো. আহসান হাবীব, ড. মো. শাহরিয়ার হায়দার, ড. সায়রা হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) সম্পাদক মাহাদী হাসান।
সেমিনারে অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম তার বক্তব্যে বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান অনেকগুলো স্বপ্নের বীজ বপন করেছিল। তার মধ্যে অন্যতম একটি ছিল শিক্ষার মানোন্নয়ন করা। কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা আশা রেখেছিলাম নতুন একটা শিক্ষানীতি প্রণয়ন হবে, কিন্তু তারা সেখানে এখন পর্যন্ত হাত দেয়নি।
শিক্ষার বাজেট নিয়ে তিনি বলেন, সর্বশেষ যে বাজেট হয়েছিল সেখানে শিক্ষার বাজেট বৃদ্ধি করা হয়নি। এত স্বল্প বাজেট দিয়ে শিক্ষার মান কখনো বৃদ্ধি করা সম্ভব না। এমনকি শিক্ষকদের মর্যাদার বিষয়ে অনেক দিন থেকে আমরা ফাইট করছি। শিক্ষকদের পরিপূর্ণ মর্যাদা ছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব বলেন, শিক্ষককে আমরা কীভাবে দেখব? আমরা দেখেছি করোনার পর শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমে সঠিক আচরণ করছে না। কীভাবে কথা বলতে হয় বা কি আচার-আচরণ করতে হয় তা তারা ভুলে গিয়েছে। আমরা হয়তো জেনারেশন গ্যাপে আছি বা হয়তো তারা অনেক অ্যাডভান্স হয়ে গিয়েছে। তবে চব্বিশের অভ্যুত্থানে আমরা তাদের এক হয়ে লড়াই করতে দেখেছি।
ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. শাহরিয়ার হায়দার বলেন, শিক্ষার্থী এবং আমাদের মধ্যে ভালো বন্ধন তৈরি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পরীক্ষার রেজাল্টের সময় সি প্লাস বা বি গ্রেড পেলে সে আমাকে অন্য চোখে দেখছে। শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা জানতে চাই না তারা আসলে কী চায়? এজন্য আমাদের ক্লাইমেট সার্ভে করা দরকার। তাহলে আমরা তাদের চাওয়া পাওয়া সম্পর্কে জানতে পারব। এমনকি শিক্ষার্থীরা এখনো জানে না কীভাবে অন্য লিঙ্গের বন্ধুদের সঙ্গে আচরণ করতে হবে। এ বিষয়ে মাইক্রো কোর্স চালু করা দরকার।
শিক্ষার্থীদের কীভাবে সহযোগিতা করা যায় এ বিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক ড. সায়রা হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা কখনো লিডারশিপের জায়গায় তেমনভাবে পৌঁছাতে পারিনি। এখন ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করার সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। আইইআর ছাত্রছাত্রীদের এবং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে পারে। বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করতে পারে যেখানে তারা (ইন্ডাস্ট্রিয়াল লোকজন) এসে শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাজের ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দিবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাদী হাসান বলেন, কোয়ালিটি এডুকেশনের (মানসম্মত শিক্ষা) জন্য শিক্ষার্থীদের প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে হবে, কারণ শিক্ষকরা তো তাদেরই পড়াবে। আমরা দেখেছি পলিটিক্স এবং এডুকেশনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য পলিটিক্স করা হয় না। এবার যারা ডাকসু নির্বাচন করতে চায় তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের নিজেদের চাওয়া-পাওয়া সম্পর্কে বলা।
মন্তব্য করুন