রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন নিয়ে ক্যাম্পাসে চলছে তুমুল আলোচনা। রাকসু, হল সংসদ ও সিনেটে প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫ বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হলেও নিয়মিত শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে হল সংসদ বাবদ ৩০ টাকা এবং রাকসু বাবদ ১৫ টাকা করে ফি নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অনেকেরই প্রশ্ন—রাকসু ফান্ডে তাহলে বর্তমানে কত টাকা জমা আছে?
ফান্ডে জমা থাকা অর্থের বিষয়ে রাকসু ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সেতাউর রহমান জানান, ছাত্র সংসদ ফান্ডের ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা বর্তমানে এককালীন স্থায়ী আমানত (এফডিআর) করা আছে। এ ছাড়া ২০১২-১৩ সেশনে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৪৯ লাখ টাকা রাকসু ফান্ড থেকে লোন নিয়েছিল। অন্যদিকে ২০২১ সালে প্রশাসন একটি ক্রীড়া অনুষ্ঠান আয়োজন বাবদ ১২ লাখ টাকা ব্যয় করেছিল।
নির্বাচন আয়োজনের ব্যয় রাকসু ফান্ড থেকে নির্বাহ করা হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে রাকসু কোষাধ্যক্ষ ও প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, রাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। নির্বাচনের জন্য কী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলাদা কোনো বরাদ্দ দেবে, নাকি রাকসুর নিজস্ব ফান্ড থেকেই খরচ করা হবে সেটি আরও কিছুদিন পরে জানাতে পারব। তবে কিছু আনুষঙ্গিক খরচ রাকসু ফান্ড থেকে করা হচ্ছে।
অস্পষ্টতা রয়েছে হল সংসদ ফান্ড নিয়েও। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে প্রতি শিক্ষাবর্ষে হল সংসদ ফি বাবদ ৩০ টাকা বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হয়। রাকসু ফান্ডের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেলেও হল সংসদ ফির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট হল প্রশাসনের তরফ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ও বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শারমিন হামিদ বলেন, ‘হল সংসদ ফান্ড আমাদের আছে; কিন্তু ফান্ডের অবস্থা ভালো নয়। আমি দায়িত্ব নিয়েছি ৭-৮ মাস হলো, আমি জেনেছি এই ফান্ড থেকে প্রতি মাসের পত্রিকার বিলসহ শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু খরচ করা হয়। হল সংসদ ফান্ডের বিষয়ে আমি নিজেও ক্লিয়ার নই, কারণ এত বছরে তো অনেক টাকা থাকার কথা ছিল। আগে কী হয়েছে তা আমি জানি না, কিন্তু আমি যেদিন থেকে দায়িত্ব নিয়েছি, সেদিন থেকে হল সংসদ ফান্ডের হিসাব যদি চাওয়া হয়, আমি দিতে পারব।’
মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ছামিউল সরকারকে হল সংসদের ফি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি যতদূর জেনেছি, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে হল সংসদ ফি নেওয়া হয়, সেখান থেকে প্রতি মাসে আবাসিক হলের যে পত্রিকা বিল আসে, সেটি দেওয়া হয়।
রাকসু ও হল সংসদ ফান্ডের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘রাকসু ফান্ডের অর্থের বিষয়ে আমি অনেক দিন আগেই বলে দিয়েছিলাম, যেন এই ইনফরমেশনটুকু গণমাধ্যমকর্মীদের দিয়ে দেওয়া হয়। আর হল সংসদ ফান্ডের বিষয়টি প্রাধ্যক্ষরা জেনে থাকবেন, আমি তো মনে করি, শিক্ষার্থীদের সেটিও জানার অধিকার আছে। হল সংসদ ফান্ডের বিষয়ে আমিও প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা বলব।’
মন্তব্য করুন