বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও উদ্ভূত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সিন্ডিকেট সভা হওয়ার কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সভা হয়নি। এর ফলে ক্যাম্পাস ও হলগুলো খোলার বিষয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে এদিন বিকেলে ‘রেড মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে চোখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে সমাবর্তন চত্বরে এসে শেষ হয়।
এর আগে বিকেল হতেই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল থেকে আমতলায় এসে জড়ো হন। পরে মাথায় লাল কাপড় বেঁধে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার সংলগ্ন করিডোর থেকে মৌন মিছিল শুরু করেন।
উদ্ভূত সংকট সমাধানে গত মঙ্গলবার রাতে এ নিয়ে আলোচনায় বসেন প্রশাসন ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পাঁচ ঘণ্টার আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে বন্ধের আদেশ প্রত্যাহারসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বুধবার জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক কালবেলাকে বলেন, ‘যেহেতু সিন্ডিকেট মিটিং হয়নি, সুতরাং মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর কোনো কার্যকরিতা থাকবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়নি। এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের হাতে ন্যস্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা সহায়তা না করা সংকট সমাধানের কোনো পথ দেখছি না।’
সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক সোনিয়া সেহেলী কালবেলাকে বলেন, ‘বুধবার থেকে হল খোলার বিষয়ে সিন্ডিকেট মিটিং করার জন্য উপাচার্য শিক্ষার্থীদের কাছে লিখিত একটি ডকুমেন্ট চেয়েছিলেন। মঙ্গলবার পাঁচ ঘণ্টার মিটিংয়ে যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা উল্লেখ করে ছাত্র-শিক্ষক সবার সম্মতিক্রমে স্বাক্ষরিত একটি লিখিত থাকবে। সেটি সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে। তবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে বারবার কথা বললেও, তারা এতে সম্মতি দেয়নি। যে কারণে সিন্ডিকেট হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে পশুপালন অনুষদের এহসানুল হক হিমেল বলেন, ‘স্যাররা আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন। আমরা মঙ্গলবার মিটিংয়ে যারা উপস্থিত ছিলাম, তাদের সবাই স্বাক্ষর করেছি, তাহলে আবার নতুন করে কেন স্বাক্ষর করতে হবে। যেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলোর লিখিত স্টেটমেন্ট ছাড়া কোনো আলোচনায় আমরা বসব না। পরে কী কর্মসূচি হবে, তা জানানো হবে সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে।’
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে পাঁচ ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের আলোচনা চলে। আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে হল বন্ধের নোটিশ প্রত্যাহার করা হবে, আন্দোলনরত কোনো শিক্ষার্থী (সব ফ্যাকাল্টির) যাতে ভবিষ্যতে কোনো প্রকার একাডেমিক বা প্রশাসনিক হেনস্তার শিকার না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসন কর্তৃক লিখিত স্টেটমেন্ট দেওয়া হবে, আগামী সাত দিনের মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা ফের শুরু করা হবে এবং এ বিষয়ে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করা হবে।
মন্তব্য করুন