রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আরবি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হওয়ার প্রায় ৩ মাস পার হলেও রেজাল্ট না দেওয়ায় অফিসকক্ষে তালা দিয়েছেন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট ফলাফল দিতে দেরি হওয়ায় বিভাগের অফিস ও গেটে তালা দেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে ৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ২৮ আগস্ট রেজাল্ট দেওয়ার আশ্বাসে তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা। এরপরও রেজাল্ট না হওয়ার কারণে চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা হচ্ছে না বলে জানান শিক্ষার্থীরা। এতে বিভিন্ন চাকরির সার্কুলারের জন্য আবেদনও করতে পারছেন না বলে জানান তারা।
বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রেজাল্ট নিয়ে শিক্ষকরা শুধু আমাদের আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন। দুই সপ্তাহ আগে যখন রেজাল্টের জন্য তালা দেই তখন মৌখিক আশ্বাস দিয়েছিল যে, আমাদের বৃহস্পতিবার মধ্যে রেজাল্ট দেবে এবং স্যার আমাদের এটাও বলেছিলেন যদি বৃহস্পতিবার দেওয়া না হয় তাহলে আমি নিজেই তোমাদের আন্দোলনে শরিক হব। এতদিন পার হলেও এখনো উনারা রেজাল্ট নিয়ে বসেননি পর্যন্ত। রেজাল্ট নিয়ে আমাদের সঙ্গে টালবাহানা করছেন।
তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, আজকে আবার সেই মৌখিক আশ্বাস দিচ্ছে যে কালকের মধ্যে বসবে, এ সপ্তাহে রেজাল্ট দিয়ে দেব। কিন্তু এর আগেও এ কথা ৩-৪ বার বলেছে। যে শিক্ষকের রেজাল্ট দেয়নি এখনো উনি আমাদের ফোন দিতেছিল এবং বলেছিল যে, কালকের মধ্যে রেজাল্ট দিবে কিন্তু তিনিও ইতোপূর্বে অনেকবার এ কথা বলেছেন।
রেজাল্ট দেরি হওয়ার বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি আরবি বিভাগে অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন বলেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সঙ্গে এর আগেও আমরা কথা বলছি। উনিও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা রেজাল্ট নিয়ে কালকে বসব, দিনরাত খেটে হলেও আমরা আশা করছি এ সপ্তাহের মধ্যে রেজাল্ট দিয়ে দেব।
আরবি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা কমিটির শিক্ষকরা উনারের সঙ্গে কথা বলেছেন, আমিও বলেছি। এ সপ্তাহের মধ্যে রেজাল্ট হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে আমরা একাডেমিক মিটিং ছিল, তখন এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। এবার থেকে কেউ পরীক্ষা রেজাল্টের নম্বর দিতে দেরি করে তাহলে আমরা তাকে শোকজ করব। দরকার হলে পরীক্ষা কমিটি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে জানাব। রেজাল্টটা হয়ে গেলে আবার এরকম ঘটনা যেন না ঘটে আমরা পরবর্তীতে কঠোর সিদ্ধান্ত নেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল ইসলাম মাসঊদ বলেন, আমি এখনো খবরটি জানি না। পরে কথা বলি, আগে আমি দেখি ব্যাপারটা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, দু-একজন শিক্ষক খাতা জমা না দেওয়ার কারণেই রেজাল্ট দিতে দেরি হচ্ছে বলে আমি বিভাগের সভাপতি ও পরীক্ষার সভাপতি কাছ থেকে তথ্য পেয়েছি। ফল প্রকাশ একটা টিমওয়ার্ক কাজ, একজন খাতা জমা না দিলে রেজাল্ট হয় না, দিতে দেরি হয়।
তিনি আরও বলেন, ডিপার্টমেন্টের বিষয়গুলোতে সাধারণত আমরা হস্তক্ষেপ করি না। একাডেমিক মিটিং এবং পরীক্ষা কমিটি বিষয়গুলো দেখে। যাদের কারণে অচল অবস্থা হয় তাহলে আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেব।
মন্তব্য করুন