পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাব-হলগুলোতে একরুমে আটজন করে থাকতে হচ্ছে ছাত্রীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলগুলো ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
করোনা মহামারির ফলে দেশের প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শাবিপ্রবিও সেশনজটের কবলে পড়েছে। ফলে যেখানে ৫টি ব্যাচ থাকার কথা সেখানে বর্তমানে রয়েছে ৬টি ব্যাচ। একটি ব্যাচ অতিরিক্ত ও হলের সিট সংখ্যা কম থাকায় ভর্তির পর শহরের বিভিন্ন জায়গায় মেস ও হোস্টেল খুঁজতে বিড়ম্বনায় পড়তে দেখা গেছে ছাত্রীদের।
বর্তমানে শাবিতে ৩টি ছাত্র হলের পাশাপাশি ২টি ছাত্রী হল চালু রয়েছে। তা ছাড়া ছাত্রীদের জন্য নির্মাণাধীন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল উদ্বোধনের কথা থাকলে তা এখনো হয়নি। গত বছরের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো শেষ হয়নি নির্মাণকাজ। মাত্র দুটি ছাত্রী হল হওয়ায় আবাসন সংকটে হলের মসজিদ রুম ও রিডিং রুমে থাকছেন ছাত্রীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় তথ্য সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আবাসিক ছাত্রী হল ও বেগম সিরাজুন্নেসা ছাত্রী হলের অধীনে মোট সাব-হল রয়েছে ৩টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকসংলগ্ন ফজল কমপ্লেক্স, আমির কমপ্লেক্স এবং মদিনা মার্কেটের সামাদ হাউসে থাকেন মূল হলে সিট না পাওয়া প্রায় ৪ শতাধিক ছাত্রী। যেখানে ছাত্রীদের গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। প্রতিমাসে নির্দিষ্ট ভাড়া পরিশোধ করেও মিলে না পর্যাপ্ত সেবা। হল কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর দেখাশোনার অভাবে নানা সমস্যা মেনে নিয়েই থাকতে হচ্ছে ছাত্রীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর হলগুলোতে যোগাযোগ করি একটি সিটের জন্য। হল কর্তৃপক্ষ জানায় হলে ও হলের অধীনে থাকা হোস্টেলগুলোতে আপাতত জায়গা নাই এবং আমাদের নিজের মতো করে ব্যবস্থা করতে। সিলেটে আমার কোনো আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত কেউ না থাকায় শুরুতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছিল। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসে এভাবে পড়াশোনা করা খুবই কঠিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রথম বর্ষের আরেক ছাত্রী বলেন, হল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা হোস্টেলগুলোতে সিট না পেয়ে আমি বর্তমানে একটি হোস্টেলের বারান্দায় অবস্থান করছি। যেখানে আমার প্রতিমাসে খাবার খরচসহ হোস্টেল কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে আট হাজার টাকা, যা খুবই ব্যয়বহুল।
নির্মাণাধীন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. চন্দ্রানী নাগ বলেন, ‘আমি নিয়মিত হলের কাজের দেখাশোনা করছি, যেন হলটির কাজ দ্রুত শেষ করে চালু করতে পারি। ছাত্রীরা অনেক কষ্টে আছে। কিন্তু অফিসিয়াল কাজের জন্য ইউজিসির অনুমতি না পাওয়ায় অফিসে কাউকে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আশা করি, খুব দ্রুত হলটি চালু করা হবে।’
এ বিষয়ে উপচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
সাব-হলে না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে উঠতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোনো নিয়ম নাই, যেখানে সাব-হলে না থাকলে মেইন হলে সিট পাবে না। যদি আমাদের হলে জায়গা না হয় তখন তাদেরকে সাব-হলগুলোতে উঠানো হয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি এ মাসের মধ্যে নতুন হলের কাজ শেষ করতে। কাজ সম্পন্ন হলে আগামী মাস থেকে ছাত্রীদের হলে উঠানো হবে।
মন্তব্য করুন