সদ্য ঘোষিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো তিনি বিএনপি পরিবারের সন্তান। রাবি ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে এক অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এ ছাড়া এইচএসসি পাস করে ২০১৪-১৫ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন আসাদুল্লাহ-হিল-গালিব। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির পর প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষ টপকাতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপআউট হন গালিব।
তবে শীর্ষ পদ পেতে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ পাসের ভুয়া সনদ বানিয়ে সেটি দেখিয়ে রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হন।
অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রলীগ নেতা গালিব বিবাহিতও। এতকিছুর পরও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছেন।
গত শনিবার (২১ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট রাবি ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর এ কমিটিতে তাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। তার বাড়ি নওগাঁ জেলার প্রসাদপুর এলাকায়।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, গালিবের দাদা নাজিম প্রিন্সিপাল। তিনি বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এম পি শামসুর আলম প্রামাণিকের উপদেষ্টা ছিলেন। তার চাচা যুব দলের সদ্য বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া পুরো পরিবার বিএনপির স্থানীয় পর্যারের বিভিন্ন পদে দায়িত্বে ছিলেন।
আরো জানা যায়, ছাত্রলীগ নেতা গালিব ঢাকার উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত ‘অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে বিবিএ পাসের নকল একটি সনদপত্র (যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর : ৭৭-০০১৩-১২৪) বানিয়ে গত সেশনে রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হন।
এদিকে গালিবের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার এবং একটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহনের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হয়েও অবৈধভাবে হলে থাকছেন গালিব।
বিবিএ সনদপত্র নিয়ে জানতে চাইলে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কামরান চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, ‘২০ বছর ধরে এ বিশ্ববিদ্যালয় সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। এ নামে (আসাদুল্লাহ-হিল-গালিব) নামে কোনো শিক্ষার্থী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেনি।’
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মান্দা প্রশাদপুর এলাকার বিএনপির এক নেতা বলেন, ‘গালিবের পুরো পরিবার বিএনপি-জামায়েতের সঙ্গে জড়িত। তার পরিবারের লোকজন বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন পদে ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বিবাহিতও।’
এসব বিষয়ে জানতে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
তাছাড়া সার্বিক বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করা করার চেষ্টা করা হলে তাদেরও কেনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন