

আইপিএল মানেই কোটি টাকার নিলাম যুদ্ধ, হঠাৎ বদলে যাওয়া ভাগ্য আর বিদেশি তারকাদের নিয়ে দল গড়ার রুদ্ধশ্বাস লড়াই। কিন্তু আসন্ন মিনি নিলামের আগে সেই চেনা ছবিতেই বড় এক পরিবর্তনের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। বিসিসিআইয়ের নতুন নিয়মে এবার নিলাম টেবিলে থমকে যেতে পারে বিদেশি ক্রিকেটারদের আকাশছোঁয়া দাম।
১৬ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২০২৬ আইপিএলের মিনি নিলাম। যেখানে মোট ৭৭টি স্লটের মধ্যে বিদেশি ক্রিকেটারদের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৩১টি জায়গা। এরই মধ্যে নিলামে নাম লিখিয়েছেন ১৪টি দেশের ১,৩৫৫ জন ক্রিকেটার। সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয়—২ কোটি টাকার সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্যে নাম দেওয়া ৪৫ জন ক্রিকেটারের মধ্যে ৪৩ জনই বিদেশি।
এই তালিকায় রয়েছেন ক্যামেরন গ্রিন, মুস্তাফিজুর রহমান, লিয়াম লিভিংস্টোন, ড্যারিল মিচেল, রাচিন রবীন্দ্র, মাথিসা পাথিরানা, ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা, ডেভিড মিলার ও লুঙ্গি এনগিডির মতো বড় নাম। বিশেষ করে ক্যামেরন গ্রিনকে ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হাতে থাকা বিশাল পার্স (৬৪ কোটির বেশি) তাকে কেনার দৌড়ে কেকেআরকে এগিয়ে রাখছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
কিন্তু সমস্যা শুরু এখানেই। বিসিসিআই নতুন এক নীতি কার্যকর করেছে, যার ফলে বিদেশি ক্রিকেটাররা আর চাইলেই রেকর্ড গড়া দাম তুলতে পারবেন না। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, মিনি নিলামে কোনো খেলোয়াড়ের বেতন সর্বোচ্চ রিটেনশন মূল্যের বেশি হতে পারবে না—যার সীমা ধরা হয়েছে ১৮ কোটি টাকা।
অর্থাৎ নিলামে দর যতই উঠুক, বিদেশি ক্রিকেটারদের হাতে যাবে না ১৮ কোটির বেশি টাকা। এমনকি যদি দর ২০ কোটি বা তারও ওপরে উঠে, অতিরিক্ত অর্থ বিসিসিআই সরিয়ে নেবে খেলোয়াড় উন্নয়ন তহবিলে। ফলে নিলামে ‘বিডিং যুদ্ধ’ হলেও ব্যক্তিগত রেকর্ড ভাঙার সুযোগ থাকছে না বিদেশিদের জন্য।
এই নিয়ম কার্যকর হলে ২০২৩ সালের মতো দৃশ্য আর দেখা যাবে না—যখন মিচেল স্টার্ক পেয়েছিলেন ২৪.৭৫ কোটি আর প্যাট কামিন্স নিয়েছিলেন ২০.৫ কোটি টাকা। এবার সেই অঙ্ক ইতিহাসই হয়ে যেতে পারে।
ফলে প্রশ্ন উঠছে—নিলামের উত্তেজনা থাকবে ঠিকই, কিন্তু বিদেশি তারকাদের জন্য আইপিএল কি এবার সত্যিই আর ‘সোনার খনি’ থাকবে? নাকি নতুন নিয়মেই বদলে যাবে নিলামের চিরচেনা গল্প?
মন্তব্য করুন