চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ‘বাঁচলে নদী, বাঁচবে দেশ, বাঁচবে অস্তিত্ব। নদী বাঁচাও, দেশ বাঁচাও, অস্তিত্ব বাঁচাও’ স্লোগানকে সামনে রেখে ‘প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশ-পরিবেশ রক্ষা জাতীয় কমিটি’র মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সেমিনার কক্ষে সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আর রাজির সঞ্চালনায় এ মুক্ত আলোচনা শুরু হয়।
আলোচনা সভায় প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশ-পরিবেশ রক্ষা জাতীয় কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যার জন্মই হয়েছে নদীর অববাহিকায়। বাংলাদেশে মোট নদীর সংখ্যা সরকারি হিসাব মতে ৪০৫। প্রকৃতপক্ষে এর মূল সংখ্যা আড়াই হাজারেরও বেশি। ২৬ মাইল দীর্ঘ হবিগঞ্জ বানিয়াচংয়ের শুঁটকি নদীর মালিকানা ১৯৭৩ সালে এক ব্যক্তিকে দিয়ে দেওয়া হয় ৭২ সালের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে। এখন পর্যন্ত ওই নদীর মালিকানা তার নামেই রয়েছে। এদিকে ২৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বুড়িগঙ্গা নদীকে খনন করার প্রকল্প নিয়েছে সরকার।
তিনি বলেন, বর্তমান অসুস্থ পরিবেশে এসেও যদি আমরা সিদ্ধান্ত না নেই সুন্দর পৃথিবী গড়ার, তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম নিশ্বাস পর্যন্ত নিতে পারবে না। নদীর রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচর্যায় ব্যক্তি পর্যায় থেকেই শুরু করতে হবে। এ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
যুব সমাজকে লক্ষ্য করে তিনি আরও বলেন, উত্তরের হাওয়ায় গণতন্ত্র ভেসে আসবে, আমাদের এ চিন্তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যেই যুবক চিন্তা করে রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন হয় তাদের আমাদের প্রয়োজন নেই। পক্ষান্তরে যেই যুবক সমাজ পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজনীতির পরিবর্তন হবে এ চিন্তা করে তাদেরই আমাদের প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোখলেছুর রহমান বলেন, বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যে দেশ ছাড়ার প্রবণতা খুবই বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশ নদীর তীরে বাড়ি রয়েছে অনেকের। অল্প একটু জায়গার জন্য আমরা নদীর তীর ভরাট করছি। শিল্পকারখানাগুলো বর্জ্য দিয়ে নদীগুলো ভরে ফেলছে। তুরাগ, বুড়িগঙ্গা এগুলোর চাক্ষুষ প্রমাণ। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
তিনি বলেন, আমরা যদি নদীগুলোর সঠিক ব্যবহার করতে পারতাম তাহলে এত বড় বড় উড়াল সেতু তৈরি করতে হতো না। অদূর ভবিষ্যতে এ উড়াল সেতুগুলোই আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। খুবই আক্ষেপের বিষয় হলো আমাদের দেশে এত এত ফ্যাকাল্টি, ডিপার্টমেন্ট রয়েছে কোথাও নদীকেন্দ্রিক কোনো ডিপার্টমেন্ট বা পড়াশোনা নেই বললেই চলে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অতি শিগগিরই ‘নদীবিজ্ঞান’ নামে বিভাগ খোলার আহ্বান জানাচ্ছি।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও ব্রহ্মপুত্র রিভারকিপার ইবনুল সাঈদ রানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের ডেপুটি ডিরেক্টর নাজির আহমেদ সিমাব।
মন্তব্য করুন