ধর্ষণে জড়িতদের বিচার দাবিসহ ৫ দফা দাবিতে অষ্টম দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে একটি মশাল মিছিল বের করেন তারা।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে উপাচার্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তারা। সমাবেশে ঐন্দ্রিলা মজুমদার অর্না বলেন, ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যাওয়া অছাত্র দ্বারা একজন নারী নিপীড়িত হয়েছে, এটা লজ্জার। এই ধর্ষণ এক দিনের ঘটনা নয়। বছরের পর বছর অন্যায়ের বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা এ ধরনের অপকর্মের দুঃসাহস পায়।
তিনি আরও বলেন, আপনারা কথা দিয়েছিলেন পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে অছাত্রদের বের করবেন, সেটা করতে পারেননি। বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, ভাবতে অবাক লাগে ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার পরও এখনো প্রক্টোরিয়াল টিম, প্রভোস্ট কমিটি বহাল তবিয়তে আছে। অতীতের অনেক অন্যায়ের বিচার না হওয়ায় আজকের এই পরিণতি। গতবছর জুন মাসে প্রত্যয় নামের একটি ছেলে অছাত্রদের বের করার জন্য একাই আন্দোলন করেছিল, তখন যদি পদক্ষেপ নেওয়া হতো তাহলে অছাত্রদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড আমাদের দেখতে হতো না। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর গণরুমে থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা যে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে যায়, তা তাদের শিক্ষা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অছাত্র বের করার জন্য উপাচার্য পাঁচদিন সময় নিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ দেখিনি। আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ১৯৯৮ সাল থেকে আমরা দেখছি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল যখন ক্ষমতায় থাকে তাদের ছাত্র সংগঠনের ছত্রছায়ায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে, চাঁদাবাজি করে এবং ক্ষমতায় থেকে ধর্ষক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে চায়। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এই অবস্থার জন্য দায়ী। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত এ সংগ্রাম চালিয়ে যাব।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলেন, আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কিছুটা সফলও হয়েছি। একটি হলে শুধু গণরুম রয়েছে, আর কোথাও গণরুম নেই। আশা করি দ্রুতই সিট সমস্যার সমাধান হবে।
মন্তব্য করুন