জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহার বিরুদ্ধে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় বিক্ষোভ চলছে। বুধবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও বিজ্ঞান অনুষদ ভবন, প্রক্টর অফিস, ব্যাংক এবং প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত সোমবার (১১ মার্চ) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক দাবি তদন্ত সাপেক্ষে মেনে নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। পরদিন মঙ্গলবার (১২ মার্চ) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চার ঘণ্টা আলোচনা করেন উপাচার্য।
এ সময় শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের আশ্বাসে আস্থা রেখে পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু আশ্বাসের বাস্তবায়ন না হওয়ায় ফের আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই এক অফিস আদেশের মাধ্যমে বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র ও সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে শুভ্রকে অব্যাহতি দিয়ে উপাচার্য বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নেন। তবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেওয়া ব্যবস্থাকে প্রহসন উল্লেখ করে ওই দুই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি তোলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা দুই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার দাবিতে কলা অনুষদ ভবনের সামনে সাজন সাহা ও শুভ্রর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। পরে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের নিচে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।
এ সময় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে এলে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকার পর মহাসড়কে যান উপাচার্য এবং বিশেষ সিন্ডিকেট সভার ঘোষণা দেন। সিন্ডিকেটে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আজকের মতো আন্দোলন স্থগিত করে। তবে সিন্ডিকেটে যথাযথ বিচার নিশ্চিত না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এর আগে গত সোমবার (৪ মার্চ) মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহার বিরুদ্ধে একই বিভাগের নারী শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় হয়রানি এবং বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রর বিরুদ্ধে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। এরপর থেকেই ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মন্তব্য করুন