‘মহান স্বাধীনতা দিবস’ ও জাতীয় দিবস উদযাপন এবং মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা-২০২৪ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে মোট ৩১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা এবং ১৭ মার্চ ‘জাতীয় শিশু দিবস’ উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলায়তনে আলোচনা সভা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে, উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, আমরা যুদ্ধে গিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে। দেশের জনগণকে রক্ষা করার জন্য। দেশের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষে আমরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। ২৫শে মার্চ রাতে যে গুলিবর্ষণ হয়েছিল তা আজও আমাদের নাড়া দেয়। সেই রাতে মায়েরা তাদের সন্তান নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রাত্রিযাপন করেছিল। বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণ নেতৃত্ব আর দিকনির্দেশনায় আমরা সম্মিলিতভাবে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে প্রতিহত করেছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড মো. আবু তাহের বলেন, অতীতে কী হয়েছে সেগুলো আমি ভাবতে চাই না। তবে অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিধি আইনের শাসন ন্যায়বিচার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। ১৯০ বছরের ব্রিটিশ শাসন শোষণে জর্জরিত ২৩ বছর পাকিস্তান শাসন শোষণ থেকে বাঙালি জাতির মুক্তির পথ দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। দেশের স্বাধীনতা মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধুর জীবনের দীর্ষ সময় অতিবাহিত হয়েছে কারাগারে।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছে দেশের মুক্তির জন্য। ১৭৫৭ সালে এদেশে স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন দেশ গড়ে ওঠে। ইতিহাসের শুরু থেকেই সবাই এদেশকে শোষণ করে গেছে, কেউ স্বাধীনতা দেয়নি। ১৯৭১ সালে বিশ্ব মোড়লরা রাশিয়া আর ইন্ডিয়া বাদে সবাই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। বর্তমানে ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা চলছে।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, শহীদ মিনার, জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীত বাঙালি জাতির অহংকার। এর অবমাননা করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু শোষিত মানুষের জন্য সংবিধানে সমাজতন্ত্র অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আমাদের শিক্ষার্থীদের স্মার্ট ভাবে গড়ে তুলতে তাদের অনুপ্রেরণা দিতে মহান মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছি।
আলোচনা সভায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো জিনিস আমাকে আন্দোলিত করে আর খারাপ কাজগুলো ব্যথিত করে। আজকের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিয়ে উপাচার্য প্রমাণ করলেন তিনিই এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য একজন যোগ্য ব্যক্তি।
এর আগে সাবেক ভিসি ৭৩ এর আইন লঙ্ঘন করে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি করে গিয়েছেন। সাধারণ শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আমাদের নৈতিক দায়িত্বের জায়গা থেকে অনিয়ম আর দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছি। রাষ্ট্রপতি আমাদের প্রতিবাদকে সম্মান জানিয়েছেন। নতুন আরেকজন যোগ্য উপাচার্য আমাদের উপহার দিয়েছেন।
এছাড়া দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, কলেজ পরিদর্শক, হলসমূহের প্রভোস্টবৃন্দ ও আবাসিক শিক্ষকবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, অনুষ্ঠান আয়োজন কমিটির সদস্যবৃন্দ ও বিভিন্ন উপ-কমিটির সদস্যবৃন্দ, চবি অফিস প্রধানবৃন্দ, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থীবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সুধীবৃন্দ।
মন্তব্য করুন