ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি, যৌথ গবেষণা এবং উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
বুধবার (০৭ মে ২০২৫) ইউজিসি অডিটোরিয়ামে ‘ইরাসমাস প্লাস ইনফরমেশন ডে’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ এ আহ্বান জানান।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবীব অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
ইউজিসির ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের পরিচালক এবং ইরাসমাস প্লাস ন্যাশনাল ফোকাল পয়েন্ট জেসমিন পারভীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জুই চাকমা, ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং ইউজিসি ও ইইউর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
অধ্যাপক ফায়েজ বলেন, ইরাসমাস প্লাস স্কলারশিপের মাধ্যমে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, ইইউর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যোগসূত্র তৈরি এবং বিশ্ব দরবারে নিজেদের মেধা যাচাইয়ের সুযোগ পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে ইউরোপের দেশগুলো এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদানে ইইউ’র সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন এবং ইউজিসি ও ইইউর বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, ইরাসমাস প্লাস স্কলারশিপ ও ফেলোশিপ একটি সফল প্রোগ্রাম। বাংলাদেশি তরুণ শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এটি বড় ধরনের সুযোগ তৈরি করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইরাসমাস প্লাস ইনফরমেশন-ডে এর মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপ বিষয়ে অবহিত হবে এবং বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে।
অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের চাহিদার নিরিখে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে ইউজিসি কাজ করছে। ইইউর ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ প্রোগ্রাম বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করবে এবং নতুন বাংলাদেশ গড়তে অনবদ্য ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি ও ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য তিনি ইইউর প্রতি আহ্বান জানান।
অধ্যাপক মাছুমা হাবীব ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ প্রোগ্রামকে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও মর্যাদাপূর্ণ আখ্যায়িত করে বলেন, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দেশ ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিতি লাভ, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নতুন আইডিয়া বিনিময় করতে পারবে।
সভায় ইউরোপীয় কমিশনের ড. জেনি লিন্ড, ড. আশিকুর রহমান ও জেসমিন পারভীন ইরাসমাস প্লাস প্রোগ্রামের আন্তর্জাতিক মান, উচ্চশিক্ষায় সক্ষমতা বৃদ্ধি, ইরাসমাস মুন্ডাস জয়েন্ট মাস্টার্স ডিগ্রি এবং ন্যাশনাল ফোকাল পয়েন্ট এর ভূমিকা নিয়ে নলেজ শেয়ারিং সেশন পরিচালনা করেন।
উল্লেখ্য, ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপের আওতায় ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ও জয়েন্ট মাস্টার্সে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়া হয়। ইউরোপের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও মর্যাদাপূর্ণ এই বৃত্তির যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৭ সালে।
মন্তব্য করুন