

বলিউডের আকাশছোঁয়া তারকা হওয়ার বহু আগে অক্ষয় কুমারের জীবন এক নির্মম বাস্তবতার পরীক্ষায় পড়েছিল। ব্যর্থ ছবির জেরে চারপাশে ভেসে আসত অবজ্ঞার ঝড়—প্রযোজক-পরিচালকেরা তাকে ‘জঞ্জাল’ বলে ঠেলে দিতেন কোণঠাসা অন্ধকারে। পরিচালক সুনীল দর্শনের এক অকপট সাক্ষাৎকারে উঠে আসে সেই ক্ষতবিক্ষত সময়ের গল্প—অতুলনীয় পরিশ্রমী অভিনেতা অপমান সইতে সইতে একদিন প্রকাশ্যেই ভেঙে পড়েন, চোখের জল আর শক্ত মুখোশ ঢেকে রাখতে পারেননি তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি পরিচালক সুনীল দর্শন এক সাক্ষাৎকারে অক্ষয় কুমারের শুরুর দিকের সংগ্রাম নিয়ে কথা বলেন। ১৯৯৯ সালের ছবি ‘জানোয়ার’-এর শুটিংয়ের সময়ের স্মৃতিচারণ করে সুনীল জানান, অক্ষয়ের জীবনে সেই সময়টা ছিল ভয়ংকর। একের পর এক ছবি ফ্লপ করায় তিনি চারদিকে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছিলেন।
সুনীল বলেন, ‘এই সময়টায় অক্ষয়ের জীবনে ভয়ঙ্কর একটা সময় চলছিল। সব জায়গায় ধাক্কা খাচ্ছিল ও। ওকে বারবার রিজেক্ট করা হচ্ছিল, উপহাস করা হচ্ছিল। আজ ইন্ডাস্ট্রিতে যারা বড় নাম, সেই বড় বড় পরিচালক-প্রযোজকেরা তখন বলতেন—অক্ষয় মানে জঞ্জাল!’ তিনি আরও জানান, সে সময় অক্ষয়ের জনপ্রিয় ছবি ‘ধারকান’-এর কাজ থেমে গিয়েছিল এবং ‘হেরা ফেরি’ ছবির শুটিংও পেছানো হয়েছিল। তবে এই নির্মাতাদের নাম প্রকাশ করেননি সুনীল দর্শন।
সুনীল দর্শন একটি হৃদয়বিদারক ঘটনার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘অপমান সহ্য করতে না পেরে অক্ষয় তার অফিসে এসে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, তার একটি নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে, অথচ পুরো শহরে সেই ছবির একটিও পোস্টার লাগেনি। যখন তিনি ছবির প্রযোজকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান, তখন প্রযোজক তার সঙ্গে অত্যন্ত রূঢ় আচরণ করেন এবং এমন সব কটু কথা বলেন যা অক্ষয়কে মানসিকভাবে ভেঙে দেয়।’
অক্ষয়ের এমন মনোবল ভাঙা অবস্থায় সুনীল দর্শন সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি অভিনেতাকে সমর্থন করবেন। ঝুঁকি নিয়ে তিনি সেই সময় মুম্বাইয়ের সবচেয়ে দামি স্থান জুহু সার্কেল-এ ‘জানোয়ার’ ছবির বিশাল বিলবোর্ড লাগানোর ব্যবস্থা করেন, যেখানে শুধু অক্ষয়ের ছবি ছিল।
মন্তব্য করুন