দিনভর নানা আলোচনার পর অবশেষে গতকাল বুধবার রাতে ‘ডিভোর্স’ ইস্যুতে মুখ খুললেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণি। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে অভিনেতা স্বামী শরিফুল রাজকে ডিভোর্স দেওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
পুরোনো এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের ছবি পোস্ট করে পরীমণি লিখেছেন, নিশ্চই এই স্ট্যাটাসের কথা মনে আছে অনেকেরই। সে সময়ও রাজ পাঁচ দিনের মাথায় বাসায় ফিরে তার ফেসবুক থেকে এটা ডিলিট করে দিয়েছিল। তারপরও এসব ঘটনা সে পুনরাবৃত্তি করে গেছে বারবার।
পরী লেখেন, সরি বলা, না খেয়ে থাকা, পা ধরে মাফ চাওয়া, আর হবে হবে না বলা, এমনকি সুইসাইডের মতো হুমকিতেও ব্ল্যাকমেইলের শিকার হতে হয়েছে তাকে। জানেন না একই রকম ভুলের ক্ষমা কতবার করা যায়।
এসব কিছুর পরেও একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক চেয়েছিলেন পরীমণি। সেটা জানিয়ে অভিনেত্রী লেখেন, তিনি শুধু সব ভুলে সুন্দর স্বাভাবিক একটা পারিবারিক সম্পর্ক চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজ কখনোই এই সম্পর্কটাকে ওউন করেনি। সবার সামনে নিজের বউ, নিজের বাচ্চা করে বেড়ানো শরিফুল রাজকে ভয়ংকর একজন মানুষ আখ্যা দিলেন পরীমণি। যে কিনা এই সম্পর্কটাকে শুধু নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে গেল প্রতিনিয়ত, অভিযোগ এই চিত্রনায়িকার।
রাজকে একাধিকবার সুযোগ দিয়েছেন জানিয়ে এই তারকা লেখেন, তিনি এমন ভয়ংকর একজন মানুষকে বারবার সুযোগ দিয়েছি। তিনিও সুযোগ পেতেন, কারণ আইনগতভাবে তার সাথে পরীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। এসবের কারণে তিনি অসম্মানিত হয়েছেন। এরপর সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন পরীমণি।
বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে পরী লিখেছেন, তিনি রাজকে অফিসিয়ালি ডিভোর্স দিয়েছেন। খুবই স্বাভাবিক মাধ্যমে। এটাও তাকে পরীর একপ্রকার ক্ষমা করে দেওয়া। তা না হলে পরীর সাথে যে অন্যায়গুলো করেছে, তাতে রাজের জেল হওয়ার কথা।
সবশেষে সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে পরীমণি লিখেছেন, আমার ছেলের যাবতীয় খরচ, মানে ভরণপোষণ থেকে আগামীতে পড়াশোনা যা কিছু আছে সব আমি বহন করব। এতদিন যেভাবে করেছি। বাচ্চার ফুল গার্ডিয়ানশিপ এখন তার মায়ের। এ বিষয়ে যা কিছু বলার আমার আইনজীবীরা বলবেন।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর আইনজীবীর কার্যালয়ে গিয়েছিলেন পরীমণি। সেখানে আইনজীবীর পরামর্শ অনুসারে ডিভোর্স লেটার তৈরি করে ১৮ সেপ্টেম্বর (সোমবার) রাজের কাছে সেটি পাঠিয়েছেন এই চিত্রনায়িকা।
রাজ-পরীর সংসারজীবনের ১০ মাসের মাথায় তার কোলজুড়ে আসে সন্তান। রাজের সঙ্গে মিল রেখে ছেলের নাম রাখা হয়েছে ‘শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য’।
কিন্তু দেড় বছরের দাম্পত্যজীবনে নানা ঘটনা আলোচনায় এসেছে। কখনো বিদ্যা সিনহা মিম, কখনো সুনেরাহ বিনতে কামালসহ অন্য কাউকে ঘিরে রাজের প্রতি সন্দেহের তির ছুড়েছেন পরীমণি। এসব নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি।
গত ২০ মে তো পরীমণির বাসা থেকে নিজের জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে আসেন রাজ। এরপর ২৯ মে রাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সুনেরাহ, তানজিন তিশা ও নাজিফা তুষির সঙ্গে বেশ কিছু ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি-ভিডিও ফাঁস হয়। সেই ঘটনায় দুজনের মধ্যকার সম্পর্কে আরও দূরত্ব তৈরি হয়। সবশেষে ভেঙেই গেল দুজনের বন্ধন।
মন্তব্য করুন