

বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গত এক দশকে ২৫ কোটি মানুষ নিজ দেশে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন— অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হচ্ছেন। সোমবার (১০ নভেম্বর) প্রকাশিত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতিসংঘের ৩০তম জলবায়ু সম্মেলন (কপ৩০) শুরুর আগে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। সম্মেলনটি আজ থেকে ব্রাজিলের বেলেম শহরে শুরু হয়েছে।
ইউএনএইচসিআর জানায়, সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে বাস করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ সুদান ও ব্রাজিলের বন্যা, কেনিয়া ও পাকিস্তানের রেকর্ড তাপমাত্রা এবং চাদ ও ইথিওপিয়ায় পানির তীব্র সংকট— এসব উদাহরণ জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব তুলে ধরে।
ইউএনএইচসিআর আরও বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তন শুধু নতুন বাস্তুচ্যুতি ঘটাচ্ছে না; ইতোমধ্যে যারা ঘরছাড়া হয়েছে এবং যারা তাদের আশ্রয় দিচ্ছে, তাদের জীবন আরও কঠিন করে তুলছে।
সংস্থাটি সতর্ক করে জানায়, বৈশ্বিক জলবায়ু অভিযোজন তহবিলের মাত্র এক-চতুর্থাংশ অর্থই সংঘাতপ্রবণ দেশগুলোতে পৌঁছায়, অথচ এসব দেশেই শরণার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি বলেন, যদি আমরা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা চাই, তবে আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে সেইসব অঞ্চলে যেখানে মানুষ সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে।
তিনি আরও বলেন, নতুন বাস্তুচ্যুতি ঠেকাতে হলে জলবায়ু তহবিল অবশ্যই সেইসব কমিউনিটিতে পৌঁছাতে হবে যারা ইতোমধ্যেই প্রান্তিক অবস্থায় রয়েছে। এই সম্মেলনে শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তব পদক্ষেপ দেখতে হবে।
এবারের কপ-৩০ সম্মেলনে ১৯০টিরও বেশি দেশের প্রায় ৫০ হাজার প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। ব্রাজিলের আমাজন অরণ্যের বেলেম শহরে দুই সপ্তাহব্যাপী এই বৈঠকে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বৈশ্বিক পদক্ষেপ ও অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা হবে।
মন্তব্য করুন